সম্প্রতি বৌবাজারের মদন দত্ত লেনে ফাটল ধরা একটি বাড়ি। ফাইল চিত্র
রাস্তা বদল করার জেরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের খরচ আগেই এক ধাক্কায় প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছিল। সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বেড়ে দাঁড়িয়েছিল প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটিতে। এর উপরে গত তিন বছরে পর পর তিন বার বৌবাজারে নেমে এসেছে বিপর্যয়। যার জন্য এ বার প্রকল্প সম্পূর্ণ হতে দেরি হবে বলে এক রকম নিশ্চিত আধিকারিকেরা। আর তার ফলে ফের খরচ বাড়ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর। ইতিমধ্যেই সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার উপরে আরও প্রায় ২০০০ কোটি টাকা চেয়ে রেল বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন নির্মাণ সংস্থা কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) কর্তৃপক্ষ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, বর্ধিত এই খরচও চূড়ান্ত অঙ্ক নয়। আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রকল্প সম্পূর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কম-বেশি তিন বছর দেরির কারণে আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির জেরেই এই খরচ বেড়েছে। ২০১৯ সাল থেকে তিন বছরের মধ্যে বৌবাজার এলাকায় মাটি ধসে তিন-তিন বার দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। সেই ঘটনার মোকাবিলা করতে গিয়ে যে খরচ হয়েছে, সেই অঙ্ককে এই হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে বলেই খবর।
ওই সময়ে বিদেশি প্রযুক্তিবিদ এবং বিশেষজ্ঞ সংস্থার পারিশ্রমিক, আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক কেনার খরচ ছাড়াও বিপর্যয়ে ঘরছাড়া হওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের হোটেলে রাখার খরচ মেটাতে হয়েছে মেট্রোর নির্মাণকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকে। বাসিন্দাদের এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের খরচও মিটিয়েছে তারাই। ওই খরচের অঙ্ক প্রায় ১১০০ কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলতে পারে বলে অনুমান।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ এখনও ওই খরচ মেটাতে সম্মত হননি। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের বিবাদের এখনও মীমাংসা হয়নি। উভয় পক্ষই মধ্যস্থতাকারী বা আরবিট্রেটরের দ্বারস্থ হয়েছে। ফলে, এই খরচ কেএমআরসিএল-এর মূল প্রকল্পের খরচের সঙ্গে যোগ হলে মোট খরচ তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বাড়তে পারে বলে জানাচ্ছেন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট বৌবাজারে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে প্রথম বার বিপর্যয় ঘটে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গে। সেই সময়ে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তার পরে চলতি বছরের মে এবং অক্টোবর মাসে ফের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় বৌবাজার। বহু বাসিন্দা আবারও ঘরছাড়া হন।