Road Safety

হাসপাতালের সামনেও বিপজ্জনক পারাপার, হুঁশ ফেরাতে ব্যর্থ বেহালা

এমনই একাধিক দৃশ্য দেখা গেল দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায়। যাঁরা বিধি ভাঙলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও পুলিশি তৎপরতা দেখা যায়নি। অধিকাংশ জায়গাতেই পুলিশ ছিল না।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৩ ০৫:০৪
Share:

মানে না মানা: চলন্ত গাড়ির মধ্যে দিয়ে রাস্তা পারাপার। বুধবার, এসএসকেএমের সামনে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে একমুখী হরিশ মুখার্জি রোডে দ্রুত গতিতে যানবাহন চলছে। তারই মধ্যে এক মহিলা শিশু কোলে দৌড়ে রাস্তা পেরোতে যাচ্ছিলেন। একটি ট্যাক্সি জোরে ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ায় কোনও মতে রক্ষা পেলেন তিনি। হাসপাতালের সামনে ওই রাস্তায় এক জন পুলিশকর্মীরও দেখা মিলল না। আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়েও চোখে পড়ল না টহলদার পুলিশের মোটরবাইক।

Advertisement

এসএসকেএম হাসপাতাল সংলগ্ন ওই রাস্তা শুধু নয়, বুধবার দুপুরে পথের বিধি ভাঙার এমনই একাধিক দৃশ্য দেখা গেল দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায়। যাঁরা বিধি ভাঙলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও পুলিশি তৎপরতা দেখা যায়নি। অধিকাংশ জায়গাতেই পুলিশ ছিল না। বেহালা চৌরাস্তায় লরির ধাক্কায় একটি শিশুর মৃত্যুর পরে লালবাজারের কর্তারা নির্দেশ দিলেও শহরের বেহাল ট্র্যাফিক ব্যবস্থার কোনও পরিবর্তনই যে হয়নি, এ দিন বিভিন্ন মোড়ে দেখা গেল সেটাই। কোথাও পুলিশের দেখাই মিলল না, কোথাও আবার পুলিশ থাকলেও তাঁকে দেখা গেল, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খোশগল্প করতে।

এ দিন একই ছবি ধরা পড়ল শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের সামনে। হাসপাতালের কর্মী, নার্স, রোগী বা তাঁদের আত্মীয়— পথের বিধি মানার বালাই নেই কারও। ঝুঁকি নিয়েই চলছে চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে রাস্তা পারাপার। সামনের মোড়ে একাধিক পুলিশকর্মী থাকলেও হাসপাতালের সামনে ছিলেন না কেউই। একই ছবি এম আর বাঙুর হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তায়। এক জন হোমগার্ড ট্র্যাফিক সামলাচ্ছিলেন। যদিও তাঁর চোখের সামনেই চলছিল বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পারাপার। কাছেই দেখা গেল, বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পারাপার আটকাতে গিয়ে পথচারীরই ধমক খেলেন এক পুলিশকর্মী। সেই পথচারীকে প্রশ্ন করায় বললেন, ‘‘হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, আর এখানে পুলিশ নিয়ম শেখাচ্ছে! যত নিয়ম কি শুধু পথচারীদের জন্য?’’

Advertisement

একই ছবি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনেও। সিগন্যাল থাকলেও তা না মেনেই যাতায়াত করছেন অধিকাংশ মানুষ। সেখানে শিশুর হাত ধরে বিপজ্জনক ভাবে রাস্তা পার হওয়ার পাশাপাশি বয়স্কদেরও দেখা গেল পথের বিধি ভাঙতে। ফুটপাতে দাঁড়ানো এক পুলিশকর্মীকে প্রশ্ন করায় বললেন, ‘‘সবাই কি আর নিয়ম মেনে চলে! আর জোর করেও কি নিয়ম মানানো যায়! মাঝেমধ্যেই বলা হয়। কেউ কথা শোনেন, কেউ শোনেন না। এ ভাবেই চলছে।’’

বেহালার দুর্ঘটনার পরে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল ট্র্যাফিক পুলিশ। লালবাজারের তরফেও পথচারীদের সচেতন করার উপরে জোর দেওয়ার পাশাপাশি পুলিশকর্মীদেরও কড়া হাতে ট্র্যাফিক সামলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে, নিচুতলার কর্মীদের একাংশের গা-ছাড়া মনোভাবে সেই উদ্যোগ যে ফলপ্রসূ হচ্ছে না, বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেই তা বোঝা গেল। যদিও এ বিষয়ে লালবাজারের এক কর্তা বললেন, ‘‘আমরা পথচারী থেকে গাড়িচালক, সকলকেই সচেতন করার উপরে জোর দিচ্ছি। সেই সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। বেআইনি ভাবে রাস্তা পারাপার আটকাতে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতেই হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement