ধৃত কল্যাণ দে ও উদ্ধার হওয়া টাকা।
চুরির গল্পে কোনও ফাঁক ছিল না। এজেসি বসু রোডে মিন্টো পার্কের কাছ থেকে বাসে উঠেছিলেন বিবাদি বাগ যাওয়ার জন্য। বাসে বেজায় ভিড়। তার মধ্যে কেউ এক জন হ্যাচকা টান মারল ব্যাগ ধরে। কিছু বোঝার আগেই ব্যাগ হাতছাড়া। চারপাশের ভিড় ঠেলে ব্যাগের হদিশ করার চেষ্টা করলেও, কোনও হদিশ পাননি। দিনদুপুরে বাস থেকে খোয়া যায় ব্যাগ এবং তার মধ্যে থাকা নগদ ৬ লাখ টাকা।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ। শেকসপিয়র সরণি থানা এলাকায় অফিস রেশমি মেটালিক লিমিটেডের। ওই দিন একটি ব্যাগে বেশ কিছু নথি এবং নগদ ৬ লাখ টাকা দিয়ে কোম্পানির কর্মচারী কল্যাণ দে-কে পাঠানো হয়েছিল বিবাদি বাগ এলাকায় ওই কোম্পানিরই অন্য একটি অফিসে। কিন্তু রাস্তায় ওই বিপত্তি।
কল্যাণের কাছে গোটা ঘটনা শুনে শেকসপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কোম্পানির কর্তা শুভম ভট্টাচার্য। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। গোটা রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা শুরু করে। কিন্তু, চুরির রহস্য ভেদ করতে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ওয়াচ শাখার আধিকারিকরাও তদন্তে নামেন। তাঁরাও ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। কল্যাণের শেকসপিয়র সরণির অফিস থেকে বেরনোর পর, বিভিন্ন জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ফের এক বার পরীক্ষা করেন গোয়েন্দারা। আর সেটা করতে গিয়েই কল্যাণের বয়ানের সঙ্গে বেশ কিছু জায়গায় অসামঞ্জস্য চোখে পড়ে গোয়েন্দাদের। তদন্তকারীদের দাবি, বয়ানের সেই অসামঞ্জস্য নিয়ে প্রশ্ন করতেই একের পর এক অসঙ্গতি বেরিয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: হাতে টিকিট, অথচ সিটের হদিশ নেই! ট্রেনে উঠে রোজ রোজ হেনস্থা যাত্রীদের
আরও পড়ুন: কোথায় ছিলেন মমতা, খোঁজ রাখতেন তাপসের? তীব্র আক্রমণে বিজেপি-বাম-কংগ্রেস
তখনই গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয় বাসে চুরি আদৌ হয়নি। গোটাটাই গল্প। টানা জেরার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে কল্যাণ স্বীকার করেন যে, তিনি নিজেই টাকা ভর্তি ব্যাগ বাড়িতে রেখে এসেছেন। পুলিশ তাঁর খড়্গপুরের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সেই ব্যাগ। সেখান থেকে পাওয়া যায় চুরির ৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। পুলিশ গ্রেফতার করেছে কল্যাণকে।