—প্রতীকতী ছবি।
থানায় এসে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ইতস্তত ঘুরছিল এক যুবক। রবিবার সাতসকালে নাইট ডিউটি সেরে পুলিশকর্মীদের অনেকেই তখন বাড়ির পথে। ওই যুবককে ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখেন এক পুলিশকর্মী। তাঁকে সামনে পেয়ে যুবকটি বলে, “আমি নিজের ভাইকে খুন করেছি। বাড়িতে ‘বডি’ পড়ে আছে। আমাকে গ্রেফতার করুন।”
হতভম্ব ওই পুলিশকর্মী যুবককে নিয়ে যান ডিউটি অফিসারের কাছে। রিঙ্কু সাউ নামে ওই যুবক টিটাগড় থানার ডিউটি অফিসারকে বাড়ির ঠিকানা বলেন। পুলিশ গিয়ে দেখে, সেখানে সত্যিই পড়ে রয়েছে এক যুবকের দেহ। টিঙ্কু সাউ (২৫) নামের ওই যুবকের দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ভাইকে খুনের অভিযোগে রবিবার সকালে গ্রেফতার করা হয়েছে রিঙ্কুকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টিঙ্কু মত্ত অবস্থায় বাড়ির লোকদের প্রচণ্ড মারধর করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, টিঙ্কুর বাড়ি টিটাগড় গুড্স শেড এলাকায়। রিঙ্কু পাড়ার মোড়ে ফুটপাতে একটি বিরিয়ানির দোকান চালান। টিঙ্কু কোনও কাজ করতেন না। মদ এবং অন্য নেশার আসক্তি ছাড়ানোর জন্য তাঁকে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে রাখতে হয়েছিল কিছু দিন। লকডাউনের আগে রাজ্যের বাইরে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন টিঙ্কু। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। তবে বাইরে থাকলেও তাঁর স্বভাবে বিশেষ বদল ঘটেনি বলেই অভিযোগ।
পাড়ার বাসিন্দা রাজেশ সাউ বলেন, “টিঙ্কু নেশা করে বাড়ির লোকেদের উপরে অত্যাচার চালাতেন। বৃদ্ধা মা-কে মারধর করতেন। মদের টাকা না পেলে দাদা-সহ বাড়ির লোকেদেরও মারতেন। অনেক সময়ে তাঁকে বেঁধে রাখতে হত। পাড়ার সবাই এটা জানত।”
টিটাগড় থানার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার মত্ত অবস্থায় গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন টিঙ্কু। ফের মদের টাকা দাবি করেন তিনি। মদের টাকা না পেয়ে বাড়ির লোকেদের মারধর করতে শুরু করেন। সেই সময়ে তাঁকে থামাতে টিঙ্কুর মাফলার তাঁর গলায় চেপে ধরেন রিঙ্কু। তাতেই শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হয় টিঙ্কুর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে শেষ রাতে পড়শিদের গিয়ে সব জানান রিঙ্কু। পাড়ার লোকেরা থানায় খবর দেওয়ার পরামর্শ দেন। পুলিশে খবর না দিয়ে রিঙ্কু নিজেই থানায় হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন।