শুরু হয়েছে পুনর্ব্যবহারের প্রক্রিয়াকরণও। প্রতীকী ছবি।
মোবাইল ও ল্যাপটপ-নির্ভর পড়াশোনা যত বাড়ছে, ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে ‘ই-ওয়েস্ট’ (ইলেকট্রনিক ওয়েস্ট) বা বৈদ্যুতিন বর্জ্যের পরিমাণ। বাড়ির পাশাপাশি স্কুল-কলেজগুলিতেও জমে যাচ্ছে পুরনো ল্যাপটপ, মোবাইল, চার্জার, সিডি, কিবোর্ডের মতো নানা সামগ্রী। ঠিক মতো সেগুলির পুনর্ব্যবহারের (রিসাইকল) ব্যবস্থা না হলে তা থেকে দূষণ ছড়াতে পারে। তাই শহরের স্কুলগুলি এখন বৈদ্যুতিন বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারের বিষয়ে সচেতনতার পাঠ দিতে শুরু করেছে পড়ুয়াদের। শুরু হয়েছে পুনর্ব্যবহারের প্রক্রিয়াকরণও।
লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ়ের শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী জানালেন, তাঁদের স্কুলে ৭৫ কেজি বৈদ্যুতিন বর্জ্য জমেছিল। সম্প্রতি সেই বর্জ্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে, যারা সেগুলির পুনর্ব্যবহারের উপযুক্ত তৈরির কাজ করে। ইন্দ্রাণী বলেন, ‘‘আজকাল পড়ুয়ারা প্রায় সকলেই ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। সেগুলির কোনওটি বাতিল হয়ে গেলে তারা স্কুলে নিয়ে এসে জমা দিচ্ছে। এ ভাবেই আমরা সম্প্রতি ৭৫ কেজি বৈদ্যুতিন বর্জ্য জমিয়েছিলাম, যা পুনর্ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে ইন্দ্রাণী জানালেন, বৈদ্যুতিন বর্জ্য নিয়ে সচেতন করার জন্য পড়ুয়াদের একটি মডেল তৈরি করে দেখানো হয়েছে, কী কী জিনিস পুনর্ব্যবহারযোগ্য হতে পারে। শুধু স্কুলের বৈদ্যুতিন বর্জ্যই নয়, পড়ুয়াদের বাড়িতে তৈরি হওয়া বৈদ্যুতিন বর্জ্যও স্কুলে নিয়ে এসে পুনর্ব্যবহারের জন্য দিতে বলা হয়েছে।
যে সংস্থা শহরের বিভিন্ন স্কুল থেকে বৈদ্যুতিন বর্জ্য সংগ্রহ করছে, তাদের তরফে জানানো হয়েছে, শ্রী শ্রী অ্যাকাডেমি স্কুল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ২০০ কেজি বৈদ্যুতিন বর্জ্য। বিবেকানন্দ কলেজ থেকেও ২০০ কেজি বৈদ্যুতিন বর্জ্য জমা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁদের স্কুলে জমে থাকা বৈদ্যুতিন বর্জ্য তাঁরা পুনর্ব্যবহারে দিয়েছেন। শ্রী শ্রী অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ সুভিনা সুংলু বললেন, ‘‘আমাদের স্কুলে বৈদ্যুতিন বর্জ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে পুনর্ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়। কিছু দিন আগেই দেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদেরও আবার সচেতন করেছি।’’
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বৈদ্যুতিন বর্জ্য দীর্ঘদিন ধরে কোথাও পড়ে থাকলে অথবা মাটির সঙ্গে মিশে গেলে নানা ধরনের দূষণ ছড়ায়। ওই ধরনের বর্জ্যে এমন সব ধাতু থাকে, যা পরিবেশ ও শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। সুতরাং, সেগুলি পুনর্ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজন।
যে বেসরকারি সংস্থা বৈদ্যুতিন বর্জ্য সংগ্রহ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলে, তাদের এক কর্তা নন্দন মল বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্কুল থেকে মোট ছ’হাজার কেজির মতো বৈদ্যুতিন বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কলকাতার স্কুলগুলি এই ব্যাপারে ধীরে ধীরে সচেতন হচ্ছে।’’