ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের ভিডিয়ো বার্তা। ভিডিয়োর স্ক্রিনশট।
হস্টেলে বসে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ পাচ্ছেন ওঁরা। হস্টেলের পুরনো বিল্ডিং মিনিট খানেকের ব্যবধানে কেঁপে কেঁপে উঠছে। এ ভাবেই হস্টেলের ঘরে দিন দশেক ধরে আটকে রয়েছেন ইউক্রেনের সুমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৭৫০ জন ভারতীয় পড়ুয়া। খাবার প্রায় কিছুই নেই। বরফ গলা জল খেতে হচ্ছে। সেটাও দিন প্রতি এক জনের বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে মাত্র এক লিটারে। এই অবস্থায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে উদ্ধার না করার অভিযোগের ক্ষোভ উগরে বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন ওই পড়ুয়ারা। একটি ভিডিয়োবার্তা প্রকাশ করেন পড়ুয়ারা জানিয়েছিলেন, ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি হেঁটে তাঁরা রাশিয়া সীমান্তের দিকে যাবেন। তার পরেই ভারতের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র টুইট করে বাইরে বেরনোর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে কোনও নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শই দেন। সেই মতো আপাতত সেখানেই ‘বন্দি’ ওই পড়ুয়ারা। কিন্তু আরও কত ঘণ্টা! প্রশ্ন ওই পড়ুয়াদের।
শনিবার সকালে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেখানে বেশ কয়েক জনকে এই পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। তাঁদের দাবি, তাঁরা সকলে সুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি পাঠরত ভারতীয় পড়ুয়া। যদিও আনন্দবাজার অনলাইন ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। ভিডিয়োয় এক তরুণীর বক্তব্য ছিল, রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। অনেক দিন অপেক্ষা করেছেন তাঁরা। হস্টেলে থাকলেও প্রাণ যেতে পারে। রাস্তাতে যেতে যেতেও মারা যেতে পারেন। তাই দ্বিতীয় বিকল্পই বেছে নিচ্ছেন তাঁরা। পথে তাঁদের কোনও অঘটন ঘটলে দায়ী থাকবে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস। ওই তরুণীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আজ রাশিয়া যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে। আমরা অনেক দিন অপেক্ষা করে আছি। আর অপেক্ষা নয়। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে এখানে আছি। আমাদের এক জনের কিছু হলে দায়ী থাকবে ভারত সরকার।’’
জানা গিয়েছে, ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইটারে জানান, ইউক্রেনের সুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের জন্য সরকার চিন্তিত।
সেফ করিডর করে তাঁদের বার করে আনার ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তবে পড়ুয়াদের হস্টেল ছেড়ে না বেরোনোর পরামর্শ দেন অরিন্দম। তাঁর পরামর্শ, অকারণে ঝুঁকি না নিয়ে যে যেখানে আছেন, সেখানেই থাকুন। সরকারের এই প্রতিক্রিয়ায় আপাতত ওই পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকার ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।