মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
কাজ শেষ করার পরেও গত দু’বছর ধরে কলকাতা পুরসভার কাছ থেকে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি পাওনা রয়েছে ঠিকাদারদের। শুধু তা-ই নয়, ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পরে কলকাতা পুরসভা থেকে অবসর নেওয়া কর্মীরা অবসরকালীন প্রাপ্য থোক টাকা (কমিউটেশন ও গ্র্যাচুইটি) পাননি এখনও। ওই প্রাপ্য মেটাতে দরকার ২০০ কোটি টাকারও বেশি। যা এই মুহূর্তে জোগাড় করা পুরসভার পক্ষে কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। আয়ের থেকে ব্যয়ের বহর বেড়ে যাওয়ার ফলেই কোষাগারের এই হাল। এই অবস্থায় আজ, শনিবার ২০২৪-’২৫ অর্থবছরের পুর বাজেট পেশ করবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পেটের সমস্যা নিয়ে মেয়র বর্তমানে ই এম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার হাসপাতাল থেকে বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনে কিছু ক্ষণের জন্য যোগ দিতে আসেন তিনি। পরে ফের হাসপাতালে ফিরে যান। পুরসভা সূত্রের খবর, আজ অ্যাম্বুল্যান্সে করেই পুরভবনে বাজেট পেশ করতে যাবেন মেয়র।
২০২২-’২৩ অর্থবছরে মেয়র ১৭৭ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ করেছিলেন। ২০২৩-’২৪ অর্থবছরে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ ছিল ১৪৪ কোটি টাকা। পুরসভা সূত্রের খবর, আজও ২০২৪-’২৫ অর্থবছরের জন্য ফের বিপুল পরিমাণ ঘাটতি বাজেট পেশ করতে চলেছেন মেয়র। পুরসভার অর্থ দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, আয়ের সঙ্গে খরচের সামঞ্জস্য না থাকায় কোষাগারে অভাব থেকেই যাচ্ছে। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে সম্পত্তিকর আদায়ের মোট পরিমাণ ছিল ৮৯০ কোটি টাকা। ২০২২-’২৩ অর্থবছরে যা বেড়ে দাঁড়ায় ১১০০ কোটি টাকা। চলতি, অর্থাৎ ২০২৩-’২৪ অর্থবছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ ১০৬৯.৩৬ কোটি টাকা। এই অর্থবছর শেষ হতে এখনও দেড় মাস বাকি। পুরসভার অর্থ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত তিনটি অর্থবর্ষের নিরিখে চলতি অর্থবর্ষে সম্পত্তিকর আদায় (শতাংশের হারে) একেবারেই সন্তোষজনক নয়। পুরসভার আয়ের প্রধান উৎসই সম্পত্তিকর।’’
পুরসভার কর-রাজস্ব দফতর সূত্রের খবর, ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের ১ এপ্রিল থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সম্পত্তিকর আদায় হয়েছিল ৯৭৮.৮১ কোটি টাকা। ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে ওই একই সময়ে আদায় হয়েছে ১০৬৯.৩৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আদায় বেড়েছে মাত্র ৯.২৫ শতাংশ। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘বর্তমান অর্থবর্ষের শুরু থেকে মেয়র সম্পত্তিকর আদায়ে জোর দিলেও আদতে তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’ পুরসভার সম্পত্তিকর দফতরের আধিকারিকদের অবশ্য দাবি, বর্তমান অর্থবর্ষ শেষ হতে মাস দেড়েক বাকি। বছরের শেষ দিকে কর আদায় অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই ২০২৩-’২৪ অর্থবছরে রেকর্ড আদায় হতে পারে বলেই তাঁদের আশা।