—প্রতীকী চিত্র।
অভিযুক্তের হদিস মেলেনি। এ দিকে একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে।
গত ২১ ডিসেম্বর, বিধাননগর পুর এলাকার কেষ্টপুরের রবীন্দ্রপল্লিতে একটি পরোটার দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার ফাটে। ওই ঘটনায় ২৩ জন আহত হন। পরে এক জনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুর্ঘটনায় জখমদের মধ্যে দ্বিতীয় জনের মৃত্যু হল। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুরজিৎ বসাক (৪৩)। এ দিন সকালে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের ব্যবসায়ী ছিলেন। ওই দুর্ঘটনা যাঁর দোকানে ঘটেছিল, সেই কৃষ্ণ দাসকে এখনও খুঁজে পায়নি বিধাননগগর তথা বাগুইআটি থানার পুলিশ।
বিধাননগর কমিশনারেটের দাবি, অভিযুক্ত দোকানদারকে খোঁজা হচ্ছে। তিনি কলকাতার বাইরে চলে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ওই দুর্ঘটনায় জখমদের সকলেরই পোড়ার পরিমাণ ৩০ শতাংশের নীচে ছিল। পুলিশের দাবি, দু’টি মৃত্যুর পিছনেই কো-মর্বিডিটি দায়ী বলে জানা গিয়েছে চিকিৎসকদের থেকে।
এই ঘটনায় প্রশাসনের উপরে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে রবীন্দ্রপল্লি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ অভিযুক্ত দোকানদারকে গ্রেফতার করতে পারছে না। এমনকি ওই দুর্ঘটনার পরে এলাকায় বৈধ ভাবে ক’টি দোকান আগুন জ্বালিয়ে রান্না করছে, তারও কোনও খোঁজও করা হয়নি বলেই অভিযোগ।
স্থানীয় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি তথা বিধাননগর পুরসভার ৪ নম্বর
বরোর চেয়ারম্যান মণীশ মুখোপাধ্যায় এ দিন কার্যত ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পুরসভা তথা প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘‘এটা কি ছেলেখেলা চলছে? দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, জেলা প্রশাসন— সবাইকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি কী ভাবে গোটা এলাকা জুড়ে বেআইনি ভাবে আগুন জ্বালিয়ে ব্যবসা হচ্ছে। গোটা এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে খাবারের দোকান। কারও কোনও বৈধতা নেই। দু’জন মানুষ মারা গেলেন। এ পর্যন্ত কোনও তরফ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হল না!’’
গত ২১ তারিখ রবীন্দ্রপল্লির একটি বাড়ির নীচে থাকা ওই দোকানে প্রথমে আগুন লাগে। বন্ধ দোকানের ভিতর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই ভিতরে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডার ফাটে। দোকানের শাটার উড়ে গিয়ে পড়ে উল্টো দিকের ওষুধের দোকানে। রাস্তায় থাকা লোকজন পুড়ে আহত হন। এর
পরে গত ২৭ তারিখ রাতে জয় সাহা নামে জখম এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এ দিন সুরজিৎ বসাক নামে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। সুরজিৎ তাঁর পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা মা-বাবাও অসুস্থ।
এ বিষয়ে বিধাননগরের এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। বিষয়টি নজরে রয়েছে। ওই সব দোকানের বৈধতা নেই। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’