শোকার্ত: মৃত খাদিজা বিবির পরিজনেরা। বৃহস্পতিবার, দেগঙ্গায়। নিজস্ব চিত্র
পরিবারের অভিযোগ, পণের দাবিতে মারধর চলতই। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে তরুণীর উপরে শুরু হয় নতুন অত্যাচার। অভিযোগ, সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে শ্বশুরবাড়ির তরফে। শেষমেশ দু’মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। বুধবার সন্ধ্যায় দেগঙ্গা থানার আমুলিয়া চাঁদপুরে মৃত্যু হয় খাদিজা বিবি (২২) নামে ওই বধূর।
মৃতার পরিবারের তরফে তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যার ভিত্তিতে পুলিশ বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে খাদিজার স্বামী শেখ ফারুক ও শাশুড়ি আশনারা বিবিকে। শ্বশুর ও ননদ পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের খোঁজ চলছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দেগঙ্গার নিরামিষার হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর আবু জাফর মণ্ডলের মেয়ে খাদিজার সঙ্গে পাঁচ মাস আগে ফারুকের বিয়ে হয়। এ দিন তরুণীর দাদা নুর আমিন অভিযোগ করেন, বিয়েতে পাত্রপক্ষের দাবি মেনে দু’দফায় নগদ ৬০ হাজার টাকা, আসবাব-সহ সোনার গয়না দেওয়ার পরে আরও টাকার দাবি করে ফারুক। নুরের আরও অভিযোগ, ‘‘অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকেই বোনের উপরে অত্যাচার বাড়িয়ে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। বোন রাজি না হওয়ায় ওকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: ‘সহানুভূতি দেখাতে ছবিটা দেখুন, চাই না!’
অভিযোগে মৃতার পরিজনেরা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁদের বাড়িতে ফোন করে শ্বশুরবাড়ি থেকে জানানো হয়, খাদিজা গলায় ফাঁস
দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁরা দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখেন, একটি খাটের উপরে শোয়ানো রয়েছে খাদিজার দেহ। ওই তরুণীর এক আত্মীয় সমিউর রহমান বলেন, ‘‘গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলে তো ঘরের মধ্যে দড়ি বা কাপড় পড়ে থাকবে। আমরা সে সব কিছুই দেখতে পাইনি।’’ শ্বাসরোধ করেই খাদিজাকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন: বাবাকে বাঁচাতে যকৃৎ দিলেন ছেলে
বৃহস্পতিবার মৃতার মা শাহিনা বিবি বলেন, ‘‘টাকার জন্য মারধর করা হত বলে মেয়েকে বাড়িতে এনে রেখেছিলাম। মঙ্গলবার জামাই ফোন করে বলল, ভুল করেছে, আর মারধর করবে না। ওই দিনই বিকেলে মেয়েকে নিয়ে যায় জামাই। বুধবার জামাই ফোন করে জানায়, মেয়ে মারা গিয়েছে। দোষীদের কঠিন শাস্তি চাই।’’