অপেক্ষা: বৃষ্টির বিকেলে বাসের জন্য দীর্ঘ লাইন। বুধবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
শহরের রাস্তায় ফের কমে গিয়েছে বেসরকারি বাস!
বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনগুলির দাবি, শহরতলির অনেক কন্টেনমেন্ট জ়োন দিয়ে বাস চলাচল করে। কিন্তু লকডাউনের জেরে ওই সব রাস্তায় বাস চালানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন এলাকা তালাবন্দি থাকায় যাত্রীর সংখ্যাও কমছে। তাই সকালের দিকে কিছু বাস রাস্তায় নামলেও দুপুরের পর থেকে সেই সংখ্যা কমতে শুরু করছে। বাসমালিকেরা জানাচ্ছেন, বেশি সমস্যা উত্তর কলকাতা ও উত্তর শহরতলিতে।
বারাসত, ব্যারাকপুর, ডানলপ, দক্ষিণেশ্বর থেকে যে সব বাস এলাকার ভিতরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ধর্মতলা, বাবুঘাট বা হাওড়ার দিকে যায়, সেগুলির অধিকাংশই এখন বন্ধ। যেমন, বরাহনগরের অক্ষয় মুখার্জি রোড কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়ায় নোয়াপাড়া-ধর্মতলা রুটের ৩৪সি বাস বন্ধ। আবার গোপাললাল ঠাকুর রোড ও দেশবন্ধু রোড কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়ায় ৩৪বি (ডানলপ-ধর্মতলা), ৪৩ (দক্ষিণেশ্বর-ধর্মতলা) এবং দক্ষিণেশ্বর ও আড়িয়াদহ থেকে বাবুঘাটের মিনিবাস পুরো বন্ধ।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘এখন ১০ শতাংশ বাস চলছে। ফের লকডাউন হওয়ায় যাত্রী নেই। কিন্তু ডিজ়েলের দাম বাড়ছে। ফাঁকা বাস নামিয়ে তেলের খরচও উঠবে না।’’ বেলেঘাটার রাসমণি বাজার কন্টেনমেন্ট জ়োন হওয়ায় ওই এলাকা দিয়ে চলাচল করা ২২১, ২২৩, ৪৫ ও ১৭ নম্বর-সহ বেশ কয়েকটি রুটের বাসে যাত্রীই হচ্ছে না। তবে যে সব বাস কন্টেনমেন্ট জ়োন দিয়ে যেতে পারছে না, তাদের জন্য অস্থায়ী বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করতে পরিবহণ দফতরে আবেদন করা হয়েছে বলে দাবি করেন সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের যুগ্ম সম্পাদক টিটো সাহা। একমাত্র বারুইপুর-কলকাতা রুটেই যাত্রীদের ভিড় রয়েছে।
আনলক পর্বে বেসরকারি বাসমালিকদের সঙ্গে রাজ্যের টানাপড়েন শুরু হয়। ছ’হাজার বাসের জন্য অনুদানের কথাও ঘোষণা করে রাজ্য। কিন্তু সুরাহা না হওয়ায় বাস অধিগ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরে পরিবহণকর্তারা বৈঠকে বসেন বাসমালিকদের সঙ্গে। আলোচনার পথ খুলে যাওয়ায় বাস নামানো শুরু করেন মালিকেরা। ‘জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস’-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আলোচনার পরে আমাদের প্রস্তাবও জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু প্রায় ১৫ দিন কেটে গেলেও কিছুই হয়নি।’’
কিছু এলাকায় লকডাউন চালু হওয়ার পরে তা নিয়ে লোকজনের ভুল ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে দাবি বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘মফস্সলের কর্মীরা ভয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। যাত্রীও কমেছে। সব মিলিয়ে গত শুক্রবার থেকে সমস্যা হচ্ছে।’’