Coronavirus in West Bengal

সচেতনতার বার্তা দেবে শেষ পাতের করোনা-সন্দেশ

আলোড়ন ফেলা কিছু ঘটলেই সেই বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নতুন মিষ্টি তৈরি করে ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরে শহরের এই মিষ্টি বিপণি।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫১
Share:

চমক: ক্রেতার অপেক্ষায় দোকানে সাজানো করোনা-সন্দেশ। রবিবার, যাদবপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

পিঙ্ক বল ছিল তাদের সর্বশেষ আলোচিত মিষ্টি। এ বার করোনাভাইরাস। যদিও করোনাভাইরাসের মতো কাঁটা কাঁটা এই সন্দেশ আদৌ কি পিঙ্ক বলের মতো জনপ্রিয়? সেই প্রশ্নের অবশ্য উত্তর খুঁজে পেতে মিষ্টির স্রষ্টাকে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন।

Advertisement

যাদবপুর এলাকা। ঘণ্টা চারেকের জন্য খোলা মিষ্টির দোকানের শো-কেসে নানা সন্দেশের সঙ্গে সাজানো ছিল ওই মিষ্টি। দেখতে যেন ঠিক করোনাভাইরাস। মিষ্টি বিক্রেতা এর জন্মের আগেই ঠিক করে ফেলেছিলেন নাম। করোনা সন্দেশের পাশেই রাখা রয়েছে করোনা কেকও।

আলোড়ন ফেলা কিছু ঘটলেই সেই বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ে নতুন মিষ্টি তৈরি করে ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরে শহরের এই মিষ্টি বিপণি। এ শহরে রয়েছে তাদের কয়েকটি শাখা। তাদেরই একটি যাদবপুরের ওই দোকানে বসে কর্ণধার রবীন পাল জানান, বিশ্বে আলোড়ন ফেলে দেওয়া করোনাভাইরাস এখন সর্বত্র আলোচ্য বিষয়। আতঙ্কের এই আবহে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে তাই কারিগরদের দিয়ে বানিয়ে ফেলা হয়েছে ওই বিশেষ সন্দেশ এবং কেক। এই মিষ্টি খাইয়ে তো বটেই, এমনকি মিষ্টির প্যাকেটেও করোনা সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা প্রচার করা হবে বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ী।

Advertisement

করোনা-বিপর্যয় ঠেকাতে সারা দেশে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। অন্য সব কিছুর মতোই সেই কারণে বন্ধ মিষ্টির দোকানও। তাই গ্রামের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন বেশির ভাগ কারিগর। কিন্তু দিন কয়েক আগে নষ্ট হয়ে যাওয়া দুধের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাড়ার মিষ্টির দোকানগুলি চার ঘণ্টার জন্য খুলে রাখতে অনুরোধ করেন। পরদিনই দোকানে থাকা অল্প কয়েক জন কারিগর নিয়ে নেমে পড়েছিলেন এই বিক্রেতা।

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই মাথায় ঘুরছিল করোনা। কম কারিগর নিয়ে নতুন মিষ্টি তৈরি করাটা রীতিমতো কঠিন ছিল। কারণ, সারাদিনে মাত্র চার ঘণ্টার এই ব্যবসায় খেয়াল রাখতে হচ্ছে স্বাস্থ্য সচেতনতা রক্ষায় সরকারি নির্দেশিকার কথাও। পাশাপাশি ঝুঁকি ছিল, এমন একটি আতঙ্ক নিয়ে মিষ্টি তৈরি করলে মানুষের কী প্রতিক্রিয়া হবে?

রবীনবাবু বলছেন, ‘‘শেষ বার আমরা বিশেষ ধরনের এই মিষ্টি বানিয়েছিলাম ইডেনে পিঙ্ক বলে দিনরাতের টেস্ট ম্যাচের সময়ে। তখন তৈরি করা হয়েছিল পিঙ্ক বলের মতো দেখতে গোলাপি মিষ্টি।’’

ইতিবাচক আলোড়ন ফেলে দেওয়া ওই বিষয় বর্তমান পরিস্থিতির সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়ায় এ বারের কাজটা যে যথেষ্ট পরিশ্রমসাধ্য মানছেন কারিগরেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কখনও পিঙ্ক বলের টেস্ট, কখনও বিশ্বকাপ ফুটবল বা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মতো আনন্দ মুহূর্তে কাজের উৎসাহ বেড়ে যায় বহুগুণ। কিন্তু এ বার তো চারধার সুনসান, আতঙ্ক আর শুধুই অনিশ্চয়তা। তার মধ্যে নতুন এই মিষ্টি তৈরি করতে তাই এতটুকু আনন্দ ছিল না। বরং সামাজিক কর্তব্য ছিল বলা যেতে পারে।

রবীনবাবুর দাবি, করোনাভাইরাস মানেই আতঙ্ক। তবে এই করোনা সন্দেশের স্বাদ মানুষকে খুশি করবে। নতুন মিষ্টি বানিয়ে কী বার্তা দিতে চাইছেন তাঁরা? মিষ্টি ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘প্যাকেটে থাকছে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নির্দেশিকা। সে সব মেনে চললে ফের এক দিন করোনামুক্ত বিশ্বে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবেন মানুষ। এটাই শুধু বলতে চাইছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement