— ছবি সংগৃহীত
করোনা যুদ্ধে সামনের সারিতে থাকা কর্মীর স্বীকৃতি পেয়েছেন পরিবহণকর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই তাঁদের প্রতিষেধক দেওয়া নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। কলকাতা ছাড়াও বিভিন্ন জেলার আঞ্চলিক
পরিবহণ কার্যালয় থেকে কর্মীদের নাম নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। বাস, মিনিবাসের কর্মী ছাড়াও ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাব এবং অটোর চালকদেরও এই সরকারি পরিকল্পনার অধীনে আনার কথা।
এ জন্য পরিবহণ শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে সদস্যদের নাম নথিভুক্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে ফর্ম পাঠানো হয়েছে। চালকদের আধার কার্ড, লাইসেন্স নম্বর নথিভুক্ত করে পরিবহণ সংগঠনগুলি ওই
তালিকা তৈরি করছে। বাসের কন্ডাক্টর, যাঁদের লাইসেন্স রয়েছে তাঁদের নামও নথিভুক্ত করা হচ্ছে। অন্যান্য বাসকর্মীরা সহায়ক হিসেবে নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ পাবেন বলে খবর।
সম্ভাব্য প্রতিষেধক প্রাপকদের নাম নথিভুক্ত করণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় প্রায় সব পরিবহণ সংগঠনই ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। এ দিন এআইটিইউসি-র ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, “প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার পরিবহণকর্মীদের অগ্রগণ্য দিতে বলেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে, প্রতিষেধক দ্রুত দেওয়া শুরু করা জরুরি। শুধু তালিকা তৈরির মধ্যেই তা যেন থমকে না থাকে।”
করোনা পরিস্থিতিতে পরিষেবা দেওয়া নিয়ে এ দিন ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’ এবং ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে। ‘বাস,
মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’ও আগামী রবিবারের মধ্যে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেবে বলে জানিয়েছে। এ দিন ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’ এবং ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’ মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা তাদের চিঠিতে ডিজ়েলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেছে।
নির্বাচন মিটতেই ফের ডিজ়েলের দাম বাড়তে শুরু করায় পরিষেবা দেওয়া নিয়ে আশঙ্কা করছেন ওই দুই সংগঠনের নেতৃত্ব। করোনা পরিস্থিতিতে ফের বাসের যাত্রী কমতে শুরু করছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
এ দিন ‘অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “করোনায় বহু বাস রুটের যাত্রী কমেছে। আকস্মিক সংক্রমণ বৃদ্ধি বাস পরিষেবাকে নতুন করে সঙ্কটে ফেলেছে। এই অবস্থায় ভাড়ার পুনর্বিন্যাস করা প্রয়োজন।”
এ ছাড়া বিভিন্ন করে ছাড়ের পাশাপাশি সিগন্যাল ভাঙার জন্য পুলিশ যে বিপুল জরিমানা আদায় করে তা মকুব করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে অভিযোগ, যে সব বাস টোল প্লাজ়া পেরিয়ে যাতায়াত করে, সেখানে তাদের ফাস্ট্যাগ বাবদ প্রচুর কর দিতে হচ্ছে। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “সরকার বাস স্যানিটাইজ় করার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। তবে ভাড়া পুনর্বিন্যাস করাও খুব জরুরি। যাত্রীর অভাব এবং ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে অনেক রুটে বাস চলছে না। পরিবহণে সঙ্কট বাড়ছে।”
‘বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু জানান, আগামী রবিবার তাঁরা সমস্যা নিয়ে বৈঠকে বসবেন। তার পরে সরকারকে জানাবেন। তবে যে হারে ডিজ়েলের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে ভাড়া বৃদ্ধিই একমাত্র সমাধান, এমনটা তিনি মানতে চাননি।