ছবি: পিটিআই।
সংক্ষেপে ‘এসএমএস’। এই শব্দটাই এখন ঘুরছে রাজারহাটের গ্রামীণ অঞ্চলে। চলতি এসএমএস-এর থেকে অবশ্য ভিন্ন।
সম্পূর্ণ অর্থ এস–স্যানিটাইজ়েশন, এম–মাস্ক, এস–সোশ্যাল ডিস্টেন্স। সচেতনতার প্রচারে গতি আনতে এই সংক্ষিপ্ত শব্দবন্ধকেই ছড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
কারণ, ইতিমধ্যেই রাজারহাটের পাঁচটি পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়ে তিন মহিলা-সহ পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। সূত্রের খবর, মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত ৭৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ওই এলাকায়। তাঁদের মধ্যে ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। ২৩ জন এখনও হাসপাতালে ভর্তি। ১৪ জনের বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে।
আরও পড়ুন: ড্রোন উড়িয়ে ভিড়ের উপরে নজরদারি নিউ টাউনে
আরও পড়ুন: বাজেয়াপ্ত গাঁজার সঙ্গে ‘ফাউ’ তিন টন কাঁচা মাছ
সেই নিরিখে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্যান্য জায়গার তুলনায় রাজারহাটের পরিস্থিতি বর্তমানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের। কিন্তু জুনের শেষ থেকে জেলা জুড়ে যে ভাবে করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী, সে দিকে তাকিয়ে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখায় জোর দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, রাজারহাট খামার মৌজায় এক ব্যক্তির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আসে শনিবার। ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই এলাকায় একটি স্টুডিয়োয় সব সতর্কতা নিয়ে শুটিং চলছিল। এলাকা থেকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পেতেই শুটিং স্থগিত রাখা হয়েছে। বিডিও জানান, ওই মৌজায় আগে কেউ আক্রান্ত হননি। শনিবার প্রথম এক জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। প্রশাসনের নির্দেশে তাই স্টুডিয়োর কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।
রাজারহাট গ্রামীণের কয়েকটি এলাকা কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও প্রশাসনের একাংশের কথায়, রাজারহাটে কন্টেনমেন্ট জ়োন কার্যত আইসোলেশন ইউনিট। কারণ, এক একটি এলাকায় এক বা কয়েক জন সংক্রমিত হয়েছেন।
পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, মানুষ যাতে বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরেন সে দিকে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। মাইক লাগিয়ে দিনভর প্রচার চলছে। জনসমাগম হয় এমন জায়গা নিয়েই চিন্তা প্রশাসনের। সেই কারণে ভিড় নিয়ন্ত্রণে বাজার এলাকায় নজর থাকছে। বিক্রেতাদের কাছাকাছি বসতে দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও কোথাও রাস্তা থেকে বাজার সরিয়ে মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ, পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসন এক যোগে কাজ করছে। রাজারহাটের বিডিও জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, সরকারের নির্দেশ মেনেই করোনা মোকাবিলায় কাজ হচ্ছে। কোন কোন জায়গায় ভিড় হয়, তা চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
দূরত্ব-বিধি মানায় জোর দেওয়া হচ্ছে। রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর জানান, করোনা এবং ডেঙ্গি প্রতিরোধে একযোগে কাজ চলছে। তবুও গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের একটি অংশের হুঁশ ফিরছে না। তাই জোর দেওয়া হয়েছে সচেতনতার প্রচারে। যার মূল কথা ‘এসএমএস’।