করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে নাখোদা মসজিদ।—ছবি পিটিআই।
আজ, শুক্রবার জুম্মার নমাজে সাধারণের প্রবেশ বন্ধ থাকবে নাখোদা মসজিদ ও ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদে। নাখোদা মসজিদের ট্রাস্টি নাসের ইব্রাহিম বলেন, ‘‘আমরা গত দু’দিন ধরেই মসজিদের সমস্ত দরজা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখছি। শুক্রবারও জুম্মার নমাজে বহিরাগতদের কাউকে মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হবে না। কেবল মসজিদের ইমাম, কর্মীরা মিলে সামান্য কয়েক জন নমাজে শামিল হবেন।’’ একই কথা জানিয়েছেন ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের কো-ট্রাস্টি শাহিদ আলম। তিনি বলেন, ‘‘ভিড় ঠেকাতে শুক্রবার বাইরে থেকে কাউকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কেবল মসজিদের কর্মীরাই সেখানে থাকবেন।’’
করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরে আজ প্রথম জুম্মা নমাজের দিন। বঙ্গীয় ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, করোনার সংক্রমণ এড়াতে সারা রাজ্যের সব মসজিদ বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি জানান, মসজিদে আজান চালু থাকবে। ইমাম সাহেব চার-পাঁচ জনকে নিয়ে নমাজ চালু রাখবেন। তবে বাইরের সাধারণ কোনও ব্যক্তিকে আর মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। তাঁরা নিজেদের বাড়িতে নমাজ পড়বেন। আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ওই ব্যবস্থা চালু রাখার আহ্বান করেছিলেন তিনি।
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা নিয়ে আতঙ্কের এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধর্মের উপাসনাস্থলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। কোনও ভাবে কোথাও যেন কোনও সামাজিক জমায়েত না হয়, তা দেখতে বলা হয়েছে উপাসনাস্থলগুলিকে। বারাসত দক্ষিণপাড়া মসজিদের এক মৌলবী এ দিন বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশ মেনে মসজিদে না এসে সবাইকে ঘরে বসে নমাজ পড়তে বলে দিয়েছি।’’ পাশাপাশি দত্তপুকুরের ‘বুড়িমার দালান’ মন্দিরের পূজারি বলেন, ‘‘ভক্তদের মন্দিরে এসে জমায়েত না করার জন্য জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
জুম্মার নমাজে প্রতি শুক্রবারই বিভিন্ন মসজিদে অসংখ্য মানুষ জড়ো হন। আবার বিভিন্ন দিনে অনেক মন্দিরেও নানা ধরনের অনুষ্ঠান চলে। ফলে সমাজের সর্বস্তরের কাছেই সামাজিক জমায়েত থেকে করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে বলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। যদিও আধিকারিকদের একাংশের দাবি, অনেকে এখনও সচেতন নন। ফলে তাঁরা উপাসনাস্থলগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছেন। দত্তপুকুর, বারাসত, কাজিপাড়া, বেড়াচাঁপা, গোলাবাড়ির মতো এলাকা থেকে তেমনই খবর জেলা প্রশাসনের কাছে এসেছে। ওই ধরনের জমায়েত ঠেকাতে পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির তরফে আবেদন করা হচ্ছে বলে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।