রাস্তার আলোর দেখভালে এ বার ঠিকাদারেরা

স্টোর্স বিভাগের এক আধিকারিক জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বাতিস্তম্ভে এলইডি আলো লাগানো হয়েছে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

আলো লাগানোর পরে পাঁচ বছর তার দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের। ফাইল চিত্র

কলকাতা পুরসভার স্টোর্স (মাল কেনা ও সরবরাহ) বিভাগকে রাস্তার আলো কেনা বন্ধের নির্দেশ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শহরের বিভিন্ন রাস্তার প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার বাতিস্তম্ভে আলো কেনা ও সরবরাহ করার দায়িত্বে দীর্ঘকাল ধরেই রয়েছে পুরসভার স্টোর্স বিভাগ। সেই আলোর মান নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা অভিযোগের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে পুরসভার অন্দরমহল। আগে মেটাল হ্যালাইড ও সোডিয়াম ভেপার আলো ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে বাতিস্তম্ভগুলিতে এলইডি আলো লাগানো হচ্ছে। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, প্রতিটি এলইডি আলোর দাম সাড়ে সাত থেকে ন’হাজার টাকার মধ্যে। তা সত্ত্বেও সরবরাহ করা ওই সব আলোর কোনও গ্যারান্টি নেই বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে।

Advertisement

স্টোর্স বিভাগের এক আধিকারিক জানান, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বাতিস্তম্ভে এলইডি আলো লাগানো হয়েছে। মাঝে মাঝে আলো খারাপ হয়ে গেলে বদলেও দেওয়া হয়। তাতে পুরসভার খরচ বাড়ে। এ বার সেই খরচে রাশ টানতে চান মেয়র। জোকা এলাকায় বরো-ভিত্তিক প্রথম প্রশাসনিক বৈঠকে ওই প্রসঙ্গ উঠতেই মেয়র ফিরহাদ নির্দেশ দেন, এখন থেকে শহরের রাস্তার বাতিস্তম্ভের জন্য ঠিকাদার সংস্থাই আলো সরবরাহ করবে। এবং তা খারাপ হয়ে গেলে তার বদলে দেওয়া বা সারাইয়ের ভারও নিতে হবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে।

বর্তমান ব্যবস্থায় বাতিস্তম্ভে আলো লাগানোর ভার দরপত্র ডেকে দেওয়া হয় কোনও ঠিকাদারকে। কিন্তু আলো সরবরাহ করে পুরসভার স্টোর্স বিভাগ। মেয়র জানান, এ বার থেকে স্টোর্স বিভাগ আর আলো কিনবে না। আলো লাগানো এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের ভার নিতে হবে সেই ঠিকাদারকে, যিনি দরপত্রের মাধ্যমে কাজের বরাত পাবেন। আলো লাগানোর পর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত সেই দায়িত্ব নিতে হবে ওই ঠিকাদারকেই। নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুরসভার স্টোর্স বিভাগের কাজকর্ম।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, আলো বাবদ খরচের হার যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তাতে লাগাম টানা জরুরি ছিল। বছরের পর বছর এ বাবদ লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে পুরসভার। আলো দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরসভার বাতিস্তম্ভে আগে মেটাল হ্যালাইড ও সোডিয়াম ভেপার বাতি লাগানো হত। কিন্তু ওই সব আলো থেকে বেশি মাত্রায় কার্বন নিঃসরণ হওয়ায় পরিবেশ দূষিত হয়। তা বন্ধ করতেই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এলইডি আলো লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুর প্রশাসন। কিন্তু এলইডি আলোর দাম অনেকটাই বেশি। তাই ওই আলো খারাপ হলে তা বদলাতে বা সারাই করতে পুরসভার খরচও বেড়ে যাচ্ছিল। তখনই আলোর মান নিয়ে কথা ওঠে। জানানো হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত ‘এনার্জি এফিশিয়েন্সি সার্ভিস লিমিটেড’ নামে এক সংস্থা শহরে আলোর ব্যবহার কী ভাবে করা উচিত, তা নিয়ে এক সমীক্ষা চালাচ্ছে পুরসভার ছ’টি বরো এলাকায়। ওই সংস্থারও মত, আলোর রক্ষণাবেক্ষণের ভার সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকেই দেওয়া উচিত। প্রশাসনিক বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনার পরেই বদলে দেওয়া হয় পুরনো নিয়ম।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement