—ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার আধিকারিকদের সই নকল করে এবং পুরসভার স্ট্যাম্প জাল করে কয়েক লক্ষ টাকার বিল জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভায়। অভিযুক্ত ঠিকাদারকে আপাতত ‘ক্লোজ’ করে দেওয়া হয়েছে এবং ওই ঠিকাদারের সংস্থার তরফে যে সমস্ত বিল পুরসভায় জমা দেওয়া হয়েছিল, তার টাকা দেওয়াও বন্ধ রেখেছে পুর-সচিবালয়।
পুরসভার সচিব হরিহরপ্রসাদ মণ্ডল সোমবার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। সই জাল প্রমাণিত হলে যাবতীয় বিলের টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ যদিও অভিযুক্ত ঠিকাদার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কলকাতা পুরসভায় গত ৩০ বছর ধরে খসখস সরবরাহ করেন হাওড়ার আমতার বাসিন্দা শামসুদ্দোহা মিদ্যা। মাসকয়েক আগে ১২৭ থেকে ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পুর স্বাস্থ্য ক্লিনিকে কিছু খসখস সরবরাহ করেছিল তাঁর সংস্থা। অভিযোগ, ওই সামগ্রীর যে সমস্ত বিল তিনি পুরসভায় জমা দিয়েছিলেন, তার সই ও স্ট্যাম্প ভুয়ো।
১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের মেডিক্যাল অফিসার কোয়েলি নস্করের সই জাল করে ওই ঠিকাদার সংস্থা কিছু বিল জমা দিয়েছিল। কিন্তু কোয়েলি তা ধরে ফেলেন এবং ১৪ নম্বর বরোর এগজিকিউটিভ হেলথ অফিসার অরূপকুমার মজুমদারকে জানান। এর পরে এর বিস্তারিত রিপোর্ট-সহ পুর সচিবকে নোট দিয়ে জানান অরূপবাবু। এ প্রসঙ্গে অরূপবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।
তবে পুর সচিবালয়ের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘ঠিকাদার ও তাঁর সংস্থা একই কায়দায় ১২৭, ১২৮, ১২৯, ১৩০ ও ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মেডিক্যাল অফিসারের সই জাল করে বিল জমা দিয়েছে। আপাতত প্রায় দশ লক্ষ টাকার বিলে অসঙ্গতি রয়েছে।’’ ওই আধিকারিকের অভিযোগ, ‘‘তদন্ত করা হলে ওই ঠিকাদার ও তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতি বেরোবে।’’ আর এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেই কান টানলে মাথা আসবে।’’
তবে অভিযুক্ত ঠিকাদার শামসুদ্দোহা অভিযোগ খারিজ করে বলেন, ‘‘সইয়ের কিছু গণ্ডগোল হতে পারে। অপরাধ আমার হতে পারে। কিন্তু জিনিস না লাগিয়ে মিথ্যা বিল জমা দিয়েছি, তা তো নয়!’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘৩০ বছর ধরে পুরসভায় খসখস সরবরাহ করছি। আমাকে ফাঁসানোর চক্রান্ত হচ্ছে। লকডাউনের সময়ে চিকিৎসকেরা ঠিকঠাক অফিসে থাকতেন না। তাই আমার শ্রমিকেরা ভুল করে কিছু বিল জমা দেয়। কিন্তু যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে তা ঠিক নয়।’’