(বাঁদিকে) বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন নীতির বিরুদ্ধে গত শনিবার এক অনুষ্ঠানে সরব হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। বিদেশ সফরে স্ত্রী, সন্তানদের সঙ্গে না রাখতে পারা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিল বিসিসিআই।
গত বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ব্যর্থতার পর বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের স্ত্রী, বান্ধবীদের যাওয়া নিয়ে নতুন নির্দেশ জারি করেছে বিসিসিআই। ৪৫ দিনের কম বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে ক্রিকেটারেরা পরিবার নিয়ে যেতে পারবেন না নতুন নিয়ম অনুযায়ী। ৪৫ দিনের বেশি সফরে সর্বোচ্চ ১৪ দিন পরিবার সঙ্গে রাখতে পারবেন তাঁরা। বিসিসিআইয়ের এই নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কোহলি। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মুখ খোলার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিল বিসিসিআই।
মঙ্গলবার বিসিসিআইয়ের এক কর্তা বলেছেন, ‘‘দীর্ঘ বিদেশ সফরের সময় ক্রিকেটারেরা বেশি দিন (১৪ দিনের বেশি) পরিবারকে সঙ্গে রাখতে চাইলে বোর্ডের কাছে আবেদন করতে পারবে। সব কিছু বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিসিআই।’’ উল্লেখ্য, গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ও কোহলি, রোহিত শর্মাদের আবেদনের ভিত্তিতে একটি ম্যাচে পরিবারকে সঙ্গে রাখার অনুমতি দিয়েছিল বিসিসিআই।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার ৪৫ দিনের বেশি সময়ের বিদেশ সফরে পরিবারকে ১৪ দিনের জন্য সঙ্গে রাখতে চাইলে তাঁকে কোচ, অধিনায়ক এবং বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে। পরিবার সঙ্গে থাকার দিন নির্দিষ্ট করে জানাতে হবে। সেই ক’দিন পরিবারের শুধু থাকার খরচ বহন করবে বোর্ড। সন্তানের বয়স ১৮ বছরের কম হলে তবেই তার খরচ বোর্ড বহন করবে। ৪৫ দিনের বেশি একটি বিদেশ সফরে এমন সুযোগ এক বারই পাওয়া যাবে। ৪৫ দিন পর্যন্ত বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে পরিবারকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে দেশে ফেরার পর বোর্ডের এই নিয়ম নিয়েই সুর চড়িয়েছেন কোহলি। শনিবারের অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘‘মনে হয় না মানুষ পরিবারের মূল্যবোধ সম্পর্কে কিছু বোঝে। আমি খুব হতাশ। মনে হয়, যাঁরা এই বিষয়গুলির সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত নয়, তাঁদের পরামর্শ শোনা হয়েছে। হয়তো তাঁদেরই মনে হয়েছে পরিবারের সদস্যদের জন্য পারফরম্যান্স খারাপ হয়। মাঠে কঠিন সময় কাটানোর পর পরিবারকে কাছে পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। স্বাভাবিক থাকার জন্য এটা কত জরুরি, সেটা হয়তো বোঝানো যাবে না।’’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘‘কঠিন পরিস্থিতিতে পরিবার পাশে থাকলে স্বাভাবিক থাকা যায়। স্বাভাবিক থাকলে তবেই তো দায়িত্ব পালন করা যাবে। আমি অন্তত পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। ঘরে কেউ একা একা বিমর্ষ ভাবে থাকতে চায় না।”
কোহলির এই মন্তব্যের পর বোর্ডের নতুন নিয়ম আবার আলোচনায় উঠে আসে। তার পরই বোর্ডের সুর নরমের ইঙ্গিত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।