প্রতীকী ছবি
দু’বছরের ছেলে দিব্যি হেঁটে বেড়ায়। কিন্তু নিচু হতে, লাফাতে বা সিঁড়ি ভাঙতে পারে না। কলকাতার বাসিন্দা দিলীপ সিংহ ও তাঁর স্ত্রীর সন্দেহ হয়েছিল, হয়তো সন্তানের কোথাও সমস্যা হচ্ছে। কারণ জানতে তিন জন চিকিৎসকের দ্বারস্থও হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রতিবারই তাঁদের আশ্বস্ত করা হয়। অবশেষে আরও দু’বছর পরে চিকিৎসকেরা জানান, জিনঘটিত বিরল রোগ
‘ডুশেন মাস্কুলার অ্যাট্রফি’র শিকার শিশুটি। আট বছরের বালক এখন হুইলচেয়ারে বন্দি। শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের ওই পড়ুয়াকে নিয়ে সিনেমা হলে যাওয়া, রেস্তরাঁয় বা বেড়াতে যাওয়ার কথা ভাবতে পারেন না তার বাবা-মা। ছেলেকে নিয়ে কোথাও যেতে হলে বেশি খরচ সত্ত্বেও রেলযাত্রা বাতিল করে বিমানযাত্রাই বেছে নেন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত দিলীপ। কারণ, হুইলচেয়ারে করে ছেলেকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে এ শহরে।
উল্টোডাঙার শুভ্র দাসের অভিজ্ঞতা আবার অন্য রকম। তাঁর শিশুকন্যার বয়স যখন মাসখানেক, তখন জানতে পারেন সে বিরল রোগ ‘এডওয়ার্ডস সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত। তাঁর প্রশ্ন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় স্ত্রীর পরীক্ষার সময়েই কি জানা যেতে পারত না সম্ভাব্য রোগের কথা?
বিরল রোগ নিয়ে কেন এখনও সচেতনতার অভাব? কেন কর্পোরেট সংস্থাগুলি বিরল রোগের সচেতনতা বা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে না? বৃহস্পতিবার বিরল রোগ নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে উঠে এল এই প্রশ্নগুলিই। সম্মেলনের মূল আয়োজক সংস্থা ‘অর্গানাইজেশনস অব রেয়ার ডিজ়িজ়েস, ইন্ডিয়া’র এই রাজ্যের কো-অর্ডিনেটর দীপাঞ্জনা দত্তের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার আগের তুলনায় সচেতন হয়েছে। চিকিৎসকদের মধ্যেও বাড়ছে সচেতনতা। কিন্তু কর্পোরেট সংস্থাগুলি এখনও এ নিয়ে ভাবেই না।’’ আগামী রবিবার সকাল সাড়ে ৬টায় ফোর্ট উইলিয়ামের দক্ষিণ গেটের পাশ থেকে রোগী এবং পরিজনদের অংশগ্রহণে শুরু হবে সচেতনতার দৌড়— ‘রেস ফর সেভেন’।