সল্টলেকের ১১ নম্বর জলের ট্যাঙ্কের জীর্ণ দশা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
সল্টলেকে এক বার জীর্ণ জলাধার থেকে চাঙড় খসে পুরকর্ত্রীর গাড়ির কাছেই ভেঙে পড়েছিল। বুধবার বর্ধমান স্টেশনে জলাধার ভেঙে পড়ে মৃত্যুর ঘটনার পরে সল্টলেকে জরাজীর্ণ জলাধারগুলির সংস্কার কবে হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। বিধাননগর পুরসভার অবশ্য দাবি, ওই সব জলাধারের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্প অম্রুতের আওতায় দরপত্র দু’দিন আগেই ডাকা হয়েছে। ঘটনাচক্রে, এর মধ্যেই ঘটেছে বর্ধমানের ঘটনা।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, সল্টলেক তৈরি হওয়ার পর থেকে জলাধারগুলির আমূল
সংস্কার কখনও হয়নি। যার জেরে অনেক জলাধারেরই গা থেকে চাঙড় খসে পড়ে লোহার শিক বেরিয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই চাঙড় খসে পড়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ।
আশঙ্কার বিষয় হল, ওই সব জলাধারের নীচেই রয়েছে সল্টলেকে জল সরবরাহকারী পাম্প হাউস। যেখানে লোকজন চাকরি করেন। ফলে, ওই সব জীর্ণ জলাধারের নীচে নিয়মিত মানুষের যাতায়াত রয়েছে। এ নিয়ে এত দিন তেমন হেলদোল দেখা না গেলেও এ দিন বর্ধমান স্টেশনে জলাধার ভেঙে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিয়ে বেশ সাড়া পড়েছে পুর কর্তৃপক্ষের মধ্যেও। একই সঙ্গে ওই সব জলাধারের নীচে থাকা পাম্প হাউসে যাতায়াতকারীরাও উদ্বিগ্ন।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ১৫টি জলাধারের সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যার মধ্যে দ্রুত
সংস্কারের প্রয়োজন ৩, ৭, ১০, ১১ ও ১৩ নম্বর জলাধারের। পুর কর্তৃপক্ষ বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন ৩, ৭, ১০ ও ১১-সহ কয়েকটি জলাধার নিয়ে। এ দিন কয়েকটি জলাধার ঘুরে দেখা গেল, সেগুলির জীর্ণ দশা। ১১ নম্বর জলাধারের মাথার উপরের অংশ ভেঙে হাঁ হয়ে রয়েছে। চাঙড় খসে বিভিন্ন জায়গায় লোহা বেরিয়ে পড়েছে। একই দশা পিএনটি কোয়ার্টার্সের ভিতরে ৩ নম্বর জলাধারেরও। ৭ নম্বর জলাধার নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন সেখানকার পাম্প হাউসের কর্মীরা। তাঁরা জানান, উপর থেকে চাঙড় খসে পড়ে জঞ্জাল সাফাইয়ের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিধাননগর পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ তুলসী সিংহরায় সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে জানান, তাঁরা চেষ্টা করছেন, যাতে দ্রুত জলাধারগুলির সংস্কারের কাজ শুরু করা যায়। তুলসীর কথায়, ‘‘শুধুই ট্যাঙ্ক নয়, সেগুলির ভিতরের পাম্প ও পাম্প হাউসেরও সংস্কারের কাজ করা হবে। বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বাস্তবায়িত হওয়ার পরে আগামী ২০ বছর আর কোনও চিন্তা করতে হবে না। দু’দিন আগেই দরপত্র ডাকা হয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের পর থেকেই জলাধারগুলির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ কার্যত হয়নি। এর পিছনে ছিল অর্থাভাব। আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, প্রতিটি জলাধারের খোলনলচে বদলাতে যে খরচ, তা পুরসভার নেই। যে কারণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিপিআর তৈরি করিয়ে তা অম্রুতের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন কত দিনে কাজ শুরু হয়, সে দিকেই চেয়ে বিধাননগর পুরসভা।