—প্রতীকী চিত্র।
বিশাখাপত্তনমে পড়তে গিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে কলকাতার বাসিন্দা, সাড়ে ১৬ বছরের এক কিশোরীর। তার বাড়ি নেতাজিনগর থানা এলাকায়। এই ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। ওই কিশোরীর এক আত্মীয় জানিয়েছেন, বিশাখাপত্তনমে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে পড়তে গিয়েছিল, সেখানকার কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট হস্টেল কর্তৃপক্ষ এবং যে নার্সিংহোমে মেয়েটির চিকিৎসা হয়েছে, সেখানকার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাঁরা ওই অভিযোগ দায়ের করেছেন। রবিবার মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশাসনিক ভাবে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। ওই কিশোরীর বাড়ি গিয়ে তার পরিবারের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ জুলাই। বিশাখাপত্তনমের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার পাশাপাশি ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-এর প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল ওই কিশোরী। এর জন্য গত প্রায় দেড় বছর যাবৎ হস্টেলে ছিল সে। মেয়েটির পরিজনেরা জানিয়েছেন, গত ১৪ জুলাই রাতে হস্টেল কর্তৃপক্ষের তরফে ফোন করে জানানো হয়, ওই কিশোরী তেতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা যেন যত শীঘ্র সম্ভব বিশাখাপত্তনমে পৌঁছন। কিশোরীর এক আত্মীয় বলেন, ‘‘১৫ তারিখ ভোরের বিমানে আমরা বিশাখাপত্তনম পৌঁছই। যে নার্সিংহোমে আমাদের মেয়েকে ভর্তি করা হয়েছিল, সেখান থেকে তাকে অন্য একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাই। সেখানেই ১৬ জুলাই দুপুরে ও মারা যায়।’’
ওই আত্মীয়ের অভিযোগ, হস্টেল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি তাঁরা পেয়েছেন। তাঁদের কর্তব্যে গাফিলতির কারণেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘হস্টেলের কয়েক জন বলছেন, আমাদের মেয়ে তেতলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে। কেউ কেউ আবার বলছেন, ও সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ও নিজেই পড়ে গিয়েছে, না কি ওকে ফেলে দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। অস্পষ্টতা রয়েছে হস্টেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও। একটি ফুটেজে ঝাপসা ভাবে আমাদের মেয়েকে ছাদে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তার পরে কেউ ছাদে গিয়েছিল কি না, সেটা জানা যায়নি।’’ কিশোরীর বাবার অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ওই কিশোরী কথা বলছিল। ঠিক মতো চিকিৎসা হলে সে বেঁচে যেত।
পরিজনদের বক্তব্য, এই মৃত্যুর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাই তাঁরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। দ্বারস্থ হয়েছেন বিজয়ওয়াড়া হাই কোর্টের। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, তদন্তভার তুলে দেওয়া হবে সিআইডির হাতে। কারণ, ঘটনাস্থল ভিন্ রাজ্য। তাই নেতাজিনগর থানার পক্ষে তদন্তে কিছু অসুবিধা আছে। সেই কারণেই এই দায়িত্ব দেওয়া হবে সিআইডি-কে।