প্রতীকী ছবি।
প্রতিষেধকের পরে এ বার কোভিড চিকিৎসার ওষুধের পরীক্ষামূলক গবেষণায় জায়গা পেল শহরের এক বেসরকারি হাসপাতাল। আগামী সপ্তাহের প্রথম থেকেই সেখানে মৃদু উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তদের উপরে নাকের স্প্রে জাতীয় ওই ওষুধটি প্রয়োগ করা হবে।
মুম্বইয়ের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা নাকের স্প্রে-টি তৈরি করেছে। যার মূল উপাদান হল নাইট্রিক অক্সাইড। দেশের মোট ১০টি জায়গায় ৩০০ জন রোগীর উপরে প্রয়োগ করা হবে নাইট্রিক অক্সাইডের স্প্রে। তার পরে সেটির কার্যকারিতা খতিয়ে দেখবেন গবেষকেরা।
শহরে ৩০ জন রোগীর উপরে তৃতীয় পর্যায়ের গবেষণামূলক পরীক্ষাটি করা হবে পিয়ারলেস হাসপাতালে। সেখানে প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর হিসেবে রয়েছেন চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক ও চিকিৎসক অজয় সরকার।
শুভ্রজ্যোতিবাবু জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীকে মুখে ডক্সিসাইক্লিন, আইভারমেক্টিন ওষুধ দেওয়া হয়। কাউকে আবার আইভি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে রেমডিসিভির দেওয়া হয়। সেখানে শুধু এই নাকের স্প্রে দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে, কত তাড়াতাড়ি ওই রোগীর শরীরে করোনা সংক্রমণের ‘ভাইরাল লোড’ কমছে। তিনি বলেন, “দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৯০ জন রোগীর উপরে নাকের নাইট্রিক অক্সাইড স্প্রে প্রয়োগ করা হয়েছিল। দৈনিক ছ’বার করে তিন দিন ওষুধটি স্প্রে করার পরে দেখা যায়, ৯৯ শতাংশ রোগীর রিপোর্ট কোভিড নেগেটিভ এসেছে।”
তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক গবেষণার জন্য নাকের ওই স্প্রে পূর্বাঞ্চলে এনেছে যে সংস্থা, সেটির ক্লিনিক্যাল অপারেশন্স ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্সের প্রধান স্বপন বিশ্বাস বলেন, “কানাডায় ওই নাকের স্প্রে-র পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ভাল ফল মিলেছে। এ বার বড় আকারে ট্রায়ালটি করে কার্যকারিতা প্রমাণের চেষ্টা চলছে। এতে সাফল্য মিললে অনেক করোনা আক্রান্তেরই উপকার হবে।”
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভ্রজ্যোতিবাবু জানাচ্ছেন, করোনা আক্রান্ত মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীরা নাক-মুখ দিয়েই সংক্রমণ ছড়ান। তাঁদের নাকে ওই স্প্রে দেওয়া হবে। তাতে সংক্রমণ ছড়ানো রোধ করা যাবে, ওই রোগীর অবস্থাও বিপজ্জনক হবে না। কারণ নাইট্রিক অক্সাইড ভাইরাসের কার্যকারিতা রোধ করে। তাঁর কথায়, “নাইট্রিক অক্সাইড দেহে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বাচ্চাদের ‘পালমোনারি আর্টারি হাইপারটেনশন’-এর চিকিৎসায় নাইট্রিক অক্সাইড থেরাপি প্রয়োগ করা হয়।”
বেসরকারি হাসপাতালটির গবেষণায় যুক্ত চিকিৎসক অজয় সরকার জানাচ্ছেন, তাঁদের বহির্বিভাগে আসা মৃদু উপসর্গযুক্ত ৩০ জন রোগীকে তিন সপ্তাহ ধরে ওই স্প্রে দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর রোগীর করোনা পরীক্ষা করে ভাইরাল লোড এবং নেগেটিভ হল কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন গবেষকেরা।