প্রতীকী ছবি
বয়ঃসন্ধিতে তৈরি হওয়া যৌন সম্পর্ককে পকসো আইনের আওতায় না আনার সুপারিশ করছে এ রাজ্যের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, সু্প্রিম কোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটি, জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের পাশাপাশি ন্যাশনাল লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি (নালসা)-র কাছেও ওই সুপারিশ পাঠানো হবে। কমিশন যে এই সুপারিশ করতে চলেছে, সেই খবর আগেই আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
মঙ্গলবার কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘ডিরেক্টরেট অব চাইল্ড রাইট্স অ্যান্ড ট্র্যাফিকিং’-এর যৌথ উদ্যোগে এক দিনের আন্তঃরাজ্য আলোচনাসভা আয়োজিত হয়। হাজির ছিলেন দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাত, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, কর্নাটকের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের সদস্যেরা। আলোচনাসভার শেষে বয়ঃসন্ধির সম্পর্ক নিয়ে ওই সুপারিশ করার কথা ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া আরও ২১টি সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে আঠারোর বছরের কম বয়সি ছেলেমেয়েদের শৈশব, কৈশোর এবং বয়ঃসন্ধি— এই তিন ভাগে ভাগ করে সেই মতো পকসো আইনকে সংশোধন করার কথা বলা হয়েছে। ভারতের মতো দেশে যেখানে আদিবাসী ও উপজাতিদের নিজস্ব আইন এবং সংস্কারকে মান্যতা দেওয়া রয়েছে, সেখানে সকলকে এক আইনের আওতায় ফেলার যে কিছু কুফলও রয়েছে, আলোচনাসভায় সে কথা জানিয়েছেন কর্নাটকের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের সদস্য পরশুরাম এম এল। তিনি জানান, যে সমস্ত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ষোড়শী কিশোরীদের বিয়ে প্রচলিত, সেখানে পকসো আইন বলবৎ করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, এক জনকে বাঁচাতে গিয়ে তার পরিবারের একাধিক জনকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। তাই সব দিক বিবেচনা করে এই আইনের সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন তিনি।
ওই সমস্ত সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, কোনও শিশুর উপরে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে আগে তার মানসিক ধাক্কা কাটাতে কাউন্সেলিংয়ের উপরে জোর দিতে। প্রেমে পড়ে বাড়ি থেকে পালানো এবং প্রকৃত পকসো মামলার মধ্যে পার্থক্য বুঝে নিয়ে সেই মতো বিচার ব্যবস্থাকে আইনি প্রক্রিয়া চালানোর কথাও বলা হয়েছে সেখানে। রয়েছে একাধিক চিকিৎসা এবং বিচার সংক্রান্ত সংশোধনের কথাও।