হাজরায় আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। — ফাইল চিত্র।
সকালে সল্টলেকের এসএসসি দফতর আচার্য সদন। দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার হাজরা মোড়। নিয়োগের দাবিতে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন ঘিরে বৃহস্পতিবার ঘটল জোড়া ধুন্ধুমার কাণ্ড। ধস্তাধস্তি, ধাক্কাধাক্কিতে জড়ালেন পুলিশ এবং আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুলিশের তৎপরতায় বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আসে দু’জায়গাতেই।
২০১৬ সালের উচ্চ প্রাথমিকে (আপার প্রাইমারি) নিয়োগের ওই চাকরিপ্রার্থীরা বৃহস্পতিবার সকালে করুণাময়ী এলাকায় আচার্য সদনের গেটের সামনে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করার পরেই পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। পুলিশি ঘেরাটোপ পেরিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় পুলিশের। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অভিযান ভেস্তে দিতে প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের আটকানো হয়। পরে তাঁদের গায়ে হাত তোলা হয়।
এর পর তাঁরা যান হাজরা মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে। সূ্ত্রের খবর, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, হাজরায় জমায়েত হয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দিকে যাবেন। কিন্তু চাকরি প্রার্থীদের একাংশ যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনে নামার পরেই তাঁদের অনেককে পুলিশ আটক করে বলে অভিযোগ। চাকরিপ্রার্থীদের টেনেহিঁচড়ে পুলিশ সরিয়ে দেয় বলেও অভিযোগ আনা হয়েছে। গরম এবং বিশৃঙ্খলার মধ্যে কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ে যান। মেট্রোর ভিতরে ঢুকেও বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের একাংশকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বেআইনি ভাবে জমায়েত এবং বিক্ষোভ প্রদর্শনের অভিযোগ হাজরা মোড় এবং সংলগ্ন অঞ্চল থেকে ৪০ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছেন কালীঘাট এবং ভবানীপুর থানার পুলিশকর্মীরা। তাঁদের লালবাজার সেন্ট্রাল লক আপে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ, ২০১৪ সালে টেটের বিজ্ঞপ্তির পর ২০১৫ সালে পরীক্ষায় বসেছিলেন এই চাকরিপ্রার্থীরা। ২০১৬ সালে ইন্টারভিউয়ের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও পান তাঁরা। কিন্তু ১৪ হাজার ৩৩৯ শূন্যপদ থাকলেও দীর্ঘ সাড়ে ন’বছর যাবৎ তাঁরা চাকরি পাননি। হাই কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কোনও প্যানেল গঠন করা হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে প্যানেল প্রকাশ করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে।
মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ২৪৪ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ তাঁরা আচার্য সদনের সামনে নিয়োগের দাবিতে থালা বাজিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসে পূর্ব বিধাননগর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেখানে আসে র্যাফও। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পুলিশ সেখান থেকে চাকরিপ্রার্থীদের সরিয়ে দেন বলে অভিযোগ।