সংসদ ভবন। — ফাইল চিত্র।
অপেক্ষায় রাজি নয় ‘ইন্ডিয়া’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা আগামী ৮ অগস্ট (মঙ্গলবার) দিন ঠিক করলেও, তা মানতে রাজি নয় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। স্পিকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অনাস্থা বিতর্কের দিন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে তারা।
গত ২৬ জুলাই ‘ইন্ডিয়া’র তরফে মোদীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে নোটিস জমা দিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। সেই সঙ্গে তেলঙ্গানার শাসকদল বিআরএসের হয়ে পৃথক ভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দিয়েছিলেন লোকসভার সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। গত মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানালেন, সেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আগামী ৮ অগস্ট আলোচনা হবে সংসদে। ১০ অগস্ট অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সংসদীয় বিধি অনুযায়ী লোকসভার স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস গ্রহণ করার ১০ দিনের মধ্যেই তা নিয়ে সংসদে বিতর্কের সূচনা হওয়ার কথা। এ বিষয়ে দিন নির্ধারণের ক্ষমতা একমাত্র স্পিকারের। সেই বিধি মেনেই ২৬ জুলাই জমা পড়া অনাস্থা নোটিসের ভিত্তিতে মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওই সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনাচক্রে, সংসদের চলতি বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১০ অগস্ট। বিরোধীদের প্রশ্ন, বাদল অধিবেশনের শেষ তিনটি দিনই কেন বরাদ্দ হল অনাস্থা নিয়ে বিতর্কের জন্য?
ইতিহাস বলছে, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই নিয়ে ২৮তম অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে চলেছে। অতীতে দেশের তিন প্রধানমন্ত্রী, মোরারজি দেশাই, ভিপি সিংহ এবং অটলবিহারী বাজপেয়ী বিরোধীদের আনা এমন অনাস্থা প্রস্তাবেই গদি হারিয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা প্রস্তাবটি এনেছিলেন জেবি কৃপালণী। বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদী সরকারের পতনের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। কারণ, ৫৪৩ সাংসদের লোকসভায় সরকারের পতন ঘটানোর জন্য প্রয়োজন ২৭২ সাংসদের সমর্থন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সাংসদ সংখ্যা ৩৩২।
এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের পর মোদীই দু’টি অনাস্থা জয়ের নজির তৈরি করবেন। ঘটনাচক্রে, শেষ পর্যন্ত আবার বাদল অধিবেশনেই লোকসভায় অনাস্থা বিতর্কে অংশ নিতে দেখা যাবে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। ঠিক পাঁচ বছরের ব্যবধানে। প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সংসদের বাদল অধিবেশনেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিল কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিজেপি-বিরোধী দল। বিজেপির সংখ্যাধিক্যের জোরে বিরোধীদের আনা প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছিল।