বিজেপি মহিলা মোর্চার মিছিল।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির মহিলা মোর্চার মিছিলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। রাজ্য মহিলা কমিশনের সামনেই সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। বাধা পেয়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন বিজেপি কর্মীরা। বৃষ্টির মধ্যেই বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন তাঁরা। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বচসা। তবে শেষে পুলিশ পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দলকে কমিশনের মধ্যে যাওয়ার অনুমতি দেয়। প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, দেবশ্রী চৌধুরীরা ভেতরে যান। তার পর ভেতর থেকেই কমিশনের মূল গেটে প্রতীকী তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। তবে লকেটরা কোনও স্মারকলিপি দেননি। তাঁদের দাবি, তাঁরা কমিশনে এসেছিলেন দেখতে সদস্যরা আছেন কি না? যে সময় লকেটরা কমিশনের ভেতরে যান, তখন দফতরে ছিলেন রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়।
আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে কেন চুপ রাজ্য মহিলা কমিশন, এই অভিযোগ তুলে শুক্রবার কমিশনের সদর দফতরে অভিযানের কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপির মহিলা মোর্চা। সল্টলেকের করুণাময়ীতে জমায়েতের কথা ছিল। তার পর মিছিল করে সিটি সেন্টার ওয়ান পর্যন্ত যাওয়ার পরিকল্পনা। সেখানে রাজ্য মহিলা কমিশন দফতর ঘেরাও করবেন বলে জানিয়েছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। কয়েক দিন আগে শ্যামবাজারের ধর্নামঞ্চ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিভিন্ন জায়গা থেকে করুণাময়ীর দিকে আসছিলেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। অভিযোগ, জমায়েতের আগেই মহিলা কর্মীদের আটকে দেওয়া হয়। নিক্কো পার্কের কাছে প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে জড়ো হয়েছিলেন মহিলারা। সেখান থেকেই বাসে করে করুণাময়ী যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ সেই বাস আটকে দেয় বলে অভিযোগ। পুলিশি বাধা পেয়ে রাস্তাতেই বসে পড়েন লকেটরা। শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে বচসা, ধস্তাধস্তি। শেষে পুলিশ লকেটদের আটক করে। তবে পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। লকেটের কথায়, ‘‘আমাদের অবৈধ ভাবে আটকে দিয়েছিল পুলিশ। কোনও কাগজ দেখাতে পারেনি। এয়ারপোর্টের আড়াই নম্বর গেটের কাছেও আমাদের কর্মীদের আটকানো হয়। যত বাধা দেবে, তত এগোব। মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মহিলাদের ভয় পাচ্ছেন। কত আটকাবে? গোটা রাজ্যের মানুষই তো পথে নেমেছেন।’’
বিজেপি মহিলা মোর্চার মিছিলের নেতৃত্বে লকেট ছাড়াও ছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল, ফাল্গুনী পাত্র, দেবশ্রী চৌধুরীরা। ব্যানার, পতাকা, পোস্টার হাতে মহিলারা পা মেলান মিছিলে। হাতে ছিল প্রতীকী তালাও। রাজ্য মহিলা কমিশনের দফতরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ডাক দিয়েছিল মহিলা মোর্চা। এই কর্মসূচি প্রথমে করুণাময়ীতেই আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল পুলিশের। সূত্রের খবর, সেখানে যানজটের আশঙ্কা করে মিছিল আটকানো হয়নি। তবে কমিশনের দফতরের সামনেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে বিজেপি মহিলা মোর্চার এই অভিযান মঙ্গলবার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে ওই দিন নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। ফলে বিজেপির কর্মসূচি পিছিয়ে শুক্রবার করা হয়। উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বিজেপি।