আরজি কর হাসপাতালে সিবিআই তদন্তকারীরা। ছবি: পিটিআই।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আবার হাজির হলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। জরুরি বিভাগ, মর্গের পরে এ বার তাঁরা গেলেন অধ্যক্ষের দফতরে।
শুক্রবার দুপুরে সিবিআইয়ের কয়েক জন তদন্তকারী অফিসার উপস্থিত হন। এর পরে প্রথমেই তাঁরা যান অধ্যক্ষের দফতরের ভবনটিতে। সিবিআইয়ের একটি সূত্র জানাচ্ছে, হাসপাতালের সুপারের কাছে পুরো আরজি কর চত্বরের ‘টপোগ্রাফি ম্যাপ’ এবং প্রতিটি ভবনের নকশা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে বেশ কয়েক বার আরজি করের ঘটনার তদন্তে জরুরি বিভাগের ভবনটিতে এসে অনুসন্ধান করতে দেখা গিয়েছে সিবিআইকে। বৃহস্পতিবার আরজি করের মর্গে গিয়েছিলেন কয়েক জন তদন্তকারী আধিকারিক।
গত ৯ অগস্ট সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে ধর্ষণ এবং খুনের। এই ঘটনায় এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। এই আবহে অভিযোগ ওঠে, সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের জমানায় গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি চলেছে। সেই নিয়ে গত ১৬ অগস্ট রাজ্য সরকারের তরফে সিট গঠন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন আইপিএস অফিসার প্রণব কুমার।
কিন্তু রাজ্য পুলিশের সিটের উপর আস্থা নেই, এই দাবিতে আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্তভার ইডিকে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলায় গত ২৩ অগস্ট বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের একক বেঞ্চ জানিয়েছিল, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি আরও জটিল ও সময়সাপেক্ষ হতে পারে। এর পরে সিবিআইকেই আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্তভার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির ওই মামলায় হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সন্দীপের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন ‘সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত আরজি করের ফরন্সিকের শিক্ষক দেবাশিস সোমও।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ হিসাবে দেহ পরীক্ষার কাজে যুক্ত থাকতেন তিনিও। কলকাতা হাই কোর্টে সন্দীপদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে মৃতদেহ লোপাটের অভিযোগও রয়েছে। সেই সমস্ত অভিযোগ এনেছেন সন্দীপদেরই প্রাক্তন সহকর্মী আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। ওই মামলার সূত্রে সন্দীপের পাশাপাশি সিজিও এবং নিজাম প্যালেসে ডেকে বেশ কয়েক বার জেরা করা হয়েছে দেবাশিসকেও।