—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের পরে একটি বিদেশি সিমের মোবাইল থেকে হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের কাছে বেশ কয়েক বার ফোন গিয়েছিল বলে সিবিআই সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ৯ অগস্ট সকাল ১০টার পর থেকে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক এবং আর জি করের আধিকারিকদের অনেকের সঙ্গেই ওই বিদেশি নম্বর থেকে কেউ কথা বলেন। সারা দিনই ওই নম্বর থেকে এমন ফোনালাপ হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর। অপরাধের পরে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা বা চিকিৎসকের শেষকৃত্য তড়িঘড়ি করার নেপথ্যে সেই নম্বরব্যবহারকারীর ভূমিকাআছে কি না, তা এখন দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, বিদেশি সিম ব্যবহার করলে সাধারণত গ্রাহকের নাম-ঠিকানা পাওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, বিদেশের সার্ভিস প্রোভাইডার গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করে না। সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “বিদেশে গিয়ে মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেটে প্রিপেড সিম ভরা হয়। এবং তা এ দেশে এনে ব্যবহার করা হয়। এ দেশে বিভিন্ন তদন্তে এমন ভিন্দেশি সিম কাজে লাগানোর কৌশল দেখা গিয়েছে।”
ওই কর্তার কথায়, ‘‘আর জি কর হাসপাতালের ক্ষেত্রে বিদেশি সিমটি দুবাই বা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা হতে পারে। ওই সিমের নম্বরটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। কার নামে সিমটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছিল, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভিনদেশি প্রিপেড সিমে সাধারণত এককালীন মোটা টাকা ভরা হয়। তা ফুরিয়ে গেলে, ফের ব্যবহারের জন্য বিদেশে গিয়েই সিম রিচার্জ করতে হয়। কোনও অপরাধের পর সিমটাই হাপিস করে দেওয়া হয়েছে বলে এর আগে দেখা গিয়েছে।”
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ থেকে তদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ থেকে শেষকৃত্য— অনেক কিছু নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে ঠিক পদ্ধতি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। তদন্তে বাধা সৃষ্টির মতলব ছিল কি না, তা-ও সিবিআই খতিয়ে দেখছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘প্রাথমিক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কিছু ভুলত্রুটি হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, গুলিয়ে দেওয়ার খেলায় কোনও পাকা মাথার অস্তিত্ব কষ্টকল্পিত নয়।”
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, এই সিম-ব্যবহারকারী এক জন ‘প্রভাবশালী’ হতেই পারেন। সরাসরি তদন্তে যুক্ত নন এমন কোনও পুলিশকর্তার ছায়াও ঘটনাক্রমের মধ্যে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।