Mahua Moitra

মহুয়ার কলকাতার বাড়িতে হানা, ৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট তল্লাশির পর খালি হাতেই বেরোল সিবিআইয়ের দল

প্রোটোকল অনুযায়ী, সিবিআইয়ের তরফে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মহুয়া মৈত্রকে সমন পাঠানো হবে। প্রচারের জন্য কৃষ্ণনগরে বাড়ি ভাড়া করে রয়েছেন তিনি। সিবিআই সূত্রে খবর, সেখানেই পাঠানো হবে সমন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ১৬:৩২
Share:

মহুয়া মৈত্র। — ফাইল চিত্র।

বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে খালি হাতেই বেরিয়েছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একটি সূত্র। সিবিআই সূত্রে খবর, সংসদে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে আলিপুরের ওই ফ্ল্যাটে প্রায় পৌনে সাত ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। কৃষ্ণনগরের বহিষ্কৃত সাংসদের কলকাতার বাড়ি থেকে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। প্রোটোকল অনুযায়ী, সিবিআইয়ের তরফে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মহুয়াকে সমন পাঠানো হবে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে কৃষ্ণনগর থেকে আবারও প্রার্থী করেছে তৃণমূল। প্রচারের জন্য সেখানেই বাড়ি ভাড়া করে রয়েছেন মহুয়া। সিবিআই সূত্রে খবর, সেই ঠিকানাতেও যাবে সমন।

Advertisement

শনিবার সকালে আলিপুরের ‘রত্নাবলী’ আবাসনে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। ওই আবাসনের ন’তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন মহুয়ার বাবা দীপেন্দ্রলাল মৈত্র এবং মা মঞ্জু মৈত্র। শনিবার সকাল ৭টা নাগাদ ওই আবাসনে পৌঁছন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাসনের কেয়ারটেকারকে দিয়ে মহুয়ার মা মঞ্জুকে ফোন করানো হয়। বহিষ্কৃত সাংসদের মা এসে দরজা খোলেন। সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। শুরু হয় তল্লাশি। দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায় সিবিআইয়ের দলটি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, খালি হাতেই বেরিয়েছেন তাদের আধিকারিকেরা। কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়নি।

সংসদে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’কাণ্ডে মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে গত ১৯ মার্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘গুরুতর’ বলে বর্ণনা করা হয় লোকপালের নির্দেশিকায়। এর পর সিবিআইয়ের তরফে মহুয়ার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের হয়। তার পরেই শনিবার তাঁর কলকাতার ফ্ল্যাটে তল্লাশি।

Advertisement

মহুয়ার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ তোলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি দাবি করেন, দুবাইয়ের শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করেছেন মহুয়া। পরিকল্পনামাফিক সংসদে ‘নিশানা’ করা হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানিকে। দুবের আরও অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্যই এমনটা করা হয়েছে। এই অভিযোগ জানিয়ে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ করার দাবি তোলেন বিজেপি সাংসদ। তার আগে মহুয়ার প্রাক্তন বান্ধব জয় অনন্ত দেহাদ্রাইয়ের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়।

মহুয়া প্রথম থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শিল্পপতি হীরানন্দানি নিজে একটি হলফনামা দিয়ে জানান, মহুয়ার সংসদের লগ ইন আইডি জেনে তাতে প্রশ্ন টাইপ করেছেন তিনি। কিন্তু ঘুষের অভিযোগ মানেননি। নিজের লগ ইন আইডি দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মহুয়া। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর বক্তব্য না শুনেই লোকসভার এথিক্স কমিটি তাঁকে একতরফা ভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত লোকসভায় পাশ হয়ে যায়।

এর পর তাঁর সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মহুয়া। সম্প্রতি সেই মামলায় শীর্ষ আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে লোকসভার সচিবালয়। সুপ্রিম কোর্টের নোটিসের জবাবে গত ১২ মার্চ লোকসভার সচিবালয় জানিয়েছে, সংবিধানের ১২২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনসভার অভ্যন্তরীণ কর্মপদ্ধতিতে বিচার বিভাগ হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ওই মামলাতেই কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থীর একটি বাসস্থানে সিবিআই তল্লাশি চালায় শনিবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement