অমিত শাহ এবং অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
কয়লা কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে সিবিআই নোটিস দেওয়ার ঘটনায় ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র অভিযোগ তুলল তৃণমূল। পাশাপাশি ভয় দেখানোর রাজনীতির অভিযোগও তুলেছেন সৌগত রায়, কুণাল ঘোষরা। ভোটের সময় এই নোটিস নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেটি আরও আগে দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য সিপিএমের। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস। অন্য দিকে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য়, আগে থেকেই তদন্ত চলছিল। প্রতিহিংসার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
রবিবারই অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। ঘটনাচক্রে রবিবার সিবিআই-এর এই নোটিসের আগের দিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে বিধাননগরের বিশেষ আদালত। অভিষেকের মামলার জেরেই শাহের বিরুদ্ধে এই সমন জারি হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, অমিত শাহের বিরুদ্ধে সমন জারি হওয়ার প্রতিশোধ নিতেই অভিষেকের স্ত্রীকে নোটিস ধরানো হয়েছে। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অমিত শাহ-কে সমনের পরে এমন কিছু একটা প্রত্যাশিতই ছিল। বিজেপির সব শরিক দল ছেড়ে গিয়েছে। একমাত্র অনুগত রয়েছে সিবিআই আর ইডি।’’ বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘বিজেপির দু’টোই অস্ত্র— সিবিআই এবং ইডি। সেই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু আমরা বলতে চাই এ ভাবে ভয় দেখানো যাবে না। আইনি লড়াই লড়বেন অভিষেক। দলও এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে।’’
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য প্রতিহিংসার অভিযোগ মানতে নারাজ। দলের নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, আগে থেকেই তদন্ত চলছিল। এখন নোটিস দেওয়া হয়েছিল বলে প্রতিহিংসার অভিযোগ বলে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ দলের আর এক নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘ভারতীয় আইন ও বিচার ব্যবস্থার হাত অনেক লম্বা। আশা করি অভিষেক তদন্তে সহায়তা করবেন।’’ আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ‘‘ঠিক জায়গাতেই পৌঁছেছে। কান টানলে মাথা আসারই কথা। কোন মাথা আসে, সেটা দেখতে হবে।’’
সিপিএম আবার দু’পক্ষকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই নোটিস এক বছর আগেও দেওয়া যেত। এখন ভোটের মুখে কেন? যে অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছে, তার তথ্য নিলেই জানা যাবে।’’ প্রায় একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘গরু পাচার, কয়লা কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। আমার মনে হয়, তদন্তে সবার সহযোগিতা করা উচিত। সিবাইআই-কেও বলব, নিরপেক্ষ তদন্ত করতে। বাংলাকে লুঠ করার এই প্রবণতা আমরা মেনে নিতে পারি না। কয়লা থেকে গরু পাচার, এর তদন্ত হোক। স্বচ্ছতার মুখোশধারী হিসেবে যে দলের নাম রয়েছে, তার মুখোশ খুলে দেওয়া উচিত।’’