বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদকে হুঁশিয়ারি দিলেন। জানালেন, প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীকে ডাকবেন। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে এজলাসে ডেকে পাঠানো হতে পারে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার নবম-দশম শ্রেণিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র বাতিলের জন্য বিচারপতির কাছে বার বার অনুরোধ করেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী। যা নাকচ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু আবার পর্ষদের আইনজীবী আবেদন করেন। এ বার কার্যত বিরক্ত হয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘পর্ষদের নিয়োগ বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। তা তারা প্রয়োগ করুক। আদালত অতিরিক্ত কোনও শব্দ নির্দেশনামায় লিখবে না।’’ এর পরে বিচারপতির সংযোজন, ‘‘যদি এর পরেও নির্দেশ দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করেন, তা হলে শিক্ষামন্ত্রীকে এজলাসে ডেকে পাঠাব।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘‘আদালতের কাছে না বলে যাঁরা এই কাণ্ড করেছেন, সেই শান্তিপ্রসাদ সিংহ, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিক।’’
প্রসঙ্গত, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে ১৮৩ জনের সুপারিশ বাতিল করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। পরে তারা আদালত জানায়, ১৮৩ জনের মধ্যে ৮১ জন ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন। বাকি ১০২ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করা হয়েছে। ফলে ৮১টি নিয়োগ বাতিল করতে পারে এক মাত্র পর্ষদ। কারণ, সুপারিশপত্র দেওয়া কমিশনের কাজ। নিয়োগপত্র দেওয়ার বা বাতিল করার ক্ষমতা পর্ষদের হাতে। এই প্রেক্ষিতে শুত্রবার আদালতে পর্ষদের বক্তব্য, যে হেতু অযোগ্যদের চিহ্নিত করে বাদ দিতে বলেছে হাই কোর্ট, সে ক্ষেত্রে ওই ৮১ জনের ক্ষেত্রেও নিয়োগপত্র বাতিলের নির্দেশ দিক আদালত। কিন্তু তা নাকচ করে দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ ক্ষেত্রে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘অযোগ্যদের বাদ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট কারও নাম তো বলা হয়নি।’’
পর্ষদকে বিচারপতি জানান, ৮১ জনের চাকরি বাতিল হচ্ছে, এমন কিছু তিনি নির্দেশনামায় লিখবেন না। কারণ তিনি নির্দিষ্ট করে কারও নাম নিয়ে কিছু বলেননি। তিনি শুধু নির্দেশ দিয়েছিলেন, ভুয়ো প্রার্থীদের চিহ্নিত করুক কমিশন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে ব্রাত্যের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে এখন কোনও কথা বলতে পারছি না। পরে কথা বলব।’’ পরবর্তীকালে তাঁর বক্তব্য পাওয়া গেলে প্রতিবেদনটি আপডেট করা হবে।