আলিপুর চিড়িয়াখানা ইউনিয়ন দখল ঘিরে অশান্তি চলছে। ছবি: সংগৃহীত।
আলিপুর চিড়িয়াখানার কর্মী ইউনিয়ন দখল ঘিরে মামলায় বৃহস্পতিবার নয়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ জানিয়েছে, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, আলিপুর থানা এবং ওয়াটগঞ্জ থানা নিরপেক্ষ ভাবে দেখবে যাতে প্রকৃত ইউনিয়নের আধিকারিকরা তাঁদের দফতরের দখল পান
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এ ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি বিচারপতি মান্থা জানিয়েছেন, সমস্ত অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখে তদন্ত করবে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতে জমা করতে হবে এক মাসের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার শুনানি-পর্বে মামলাকারী রাকেশ সিংহের আইনজীবীর দাবি, তাঁরা পুরনো ইউনিয়ন। তাঁদের দখলেই ছিল ইউনিয়ন রুম। কিন্তু এখন জোর করে হঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্য দিকে, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ইউনিয়ন রুমে একই ব্যক্তিরা রয়েছেন, কিন্তু পতাকার পরিবর্তন হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘‘এখন ভারতবর্ষে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা কখন কোন দলে আছেন এবং কতদিন আছেন সেটা বলা খুব কঠিন।’’
হাই কোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ, আলিপুর থানা এবং ওয়াটগঞ্জ থানা নিরপেক্ষভাবে দেখবে যাতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে। সমস্ত অভিযোগ পুলিশ খতিয়ে দেখে তদন্ত করবে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট ওই অভিযোগের ভিত্তিতে নিম্ন আদালতে জমা করবে এক মাসের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, জানুয়ারির শেষ পর্ব থেকেই আলিপুর চিড়িয়াখানার ইউনিয়ন দখল নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি-র সঙ্ঘাত তীব্র হয়েছে। অভিযোগ, গত ২৪ জানুয়ারি আলিপুর চিড়িয়াখানায় ইউনিয়ন দখল নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। অভিযোগ ওঠে, ৪০০ থেকে ৫০০ লোক চিড়িয়াখানার মূল দরজার তালা ভেঙে, পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকে পড়েন। ইউনিয়নের ঘর দখল এবং আলমারি ভেঙে নথি ছিনতাই করেন। পরে দক্ষিণ কলকাতা আইএনটিটিইউসি-র সভাপতি তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও তৃণমূল জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব নতুন ইউনিয়ন গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়।
কর্মী নন, এমন অনেক বহিরাগত তৃণমূলকর্মী ওই ইউনিয়ন দখল অভিযানে শামিল ছিলেন বলে অভিযোগ। কিন্তু এত সব কিছুর পরেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এ নিয়েই হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন বিজেপি-র কর্মী ইউনিয়নের নেতা রাকেশ। ৩১ জানুয়ারি ওই মামলার শুনানিতে বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘‘পশুদের কিছু হলে কাউকে ছাড়া হবে না। আমি নিজেও পশুপ্রেমী। তা বলে ৩০০ লোক নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঢুকতে পারি না।’’