কাজরী জানিয়েছেন, সব সম্পত্তির হিসেব দেওয়া আছে তাঁর ভোটের হলফনামাতেই। বিরোধীরা অহেতুক বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারকে ফের আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কয়লা পাচার তদন্তে বালিগঞ্জে বিপুল নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্ত মনজিৎ সিংহ ওরফে জিট্টির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকারও বেশি সম্পত্তি থাকার অভিযোগ করলেন তিনি। রবিবার পর পর দু’টি টুইট করেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ভ্রাতৃবধূ তথা তৃণমূল কাউন্সিলর কাজরীর সঙ্গে একাধিক যৌথ সম্পত্তি রয়েছে মনজিৎ ও তাঁর পরিবারের। শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়ে কাজরী জানিয়েছেন, সব সম্পত্তির হিসেব দেওয়া আছে তাঁর ভোটের হলফনামাতেই। বিরোধীরা অহেতুক বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে।
কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোডে দু’টি জমি কেনার কথা উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু। যেগুলির ক্ষেত্রে কাজরীর সঙ্গে যুগ্ম মালিকানা রয়েছে মনজিতের। হরিশ মুখার্জির রোডেই আরও একটি সম্পত্তি রয়েছে কাজরীর। সেটি অবশ্য কেনা হয়েছে, মনজিতের পরিবারের এক সদস্যের সঙ্গে। এ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার টার্ফ রোডে আরও একটি সম্পত্তি রয়েছে মনজিত-কাজরীর, সেই সম্পত্তিতে মনজিতের পরিবারের আরও এক সদস্য অংশীদার রয়েছেন বলেই দাবি করেছেন শুভেন্দু। এই তিনটি সম্পত্তির মোট পরিমাণ ২ কোটি ৪৪ লক্ষ ৯ হাজার ৮২৯ টাকা বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু।
২০২১ সালের কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন কাজরী। আর যে তিনটি জমি মনজিত বা তাঁর পরিবারের সঙ্গে একত্রে কেনার অভিযোগ এনেছেন শুভেন্দু, তার একটি রয়েছে ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডেই। সেই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা মুখ্যমন্ত্রী। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জের একটি বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)। গত বুধবার বালিগঞ্জের ওই বেসরকারি সংস্থার অফিসে রাতভর তল্লাশি চালিয়ে বান্ডিল বান্ডিল নগদ টাকা উদ্ধার করেছিল ইডির গোয়েন্দারা। উদ্ধার হওয়া মোট নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪০ লক্ষ। কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তের সূত্রেই এই বেসরকারি সংস্থাটির খোঁজ মিলেছে বলে দাবি করেছিল ইডি। ওই সংস্থার মালিক বিক্রম সাকারিয়াকেও ইতিমধ্যে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। সঙ্গে ১৫ ফ্রেব্রুয়ারি দিল্লির ইডির দফতরে তলব করা হয়েছে মনজিৎকেও।
এই ঘটনার পরেই রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা টুইট করে মনজিতের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি প্রকাশ করেন। সঙ্গে দাবি করেন, এই মনজিত তৃণমূলের হিন্দি শাখার দক্ষিণ কলকাতার সভাপতি। এ ছাড়াও মনজিতের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পারিবারিক যোগাযোগ রয়েছে বলেও অভিযোগ করে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে আনেন তাঁরা। পাল্টা কার্তিকও সংবামাধ্যমে তাঁর আয়োজিত অনুষ্ঠান মঞ্চে এক সঙ্গে মনজিত-শুভেন্দুর উপস্থিত থাকার ছবি প্রকাশ করেছিলেন। সঙ্গে দাবি করেছিলেন, ‘‘মনজিতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই পরিচিত আমি। কিন্তু শুভেন্দু যে সব দাবি করছেন তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’’ রবিবার শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন কাজরী। তিনি বলেন, ‘‘কারও সঙ্গে কারও সম্পর্ক থাকাটা অন্যায় নয়। অভিযোগ ওঠা আর দোষী প্রমাণিত হয়ে যাওয়া এক ঘটনা নয়। আর যে সব সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে, সেই সব সম্পত্তির কথা আমার ভোটের হলফনামায় দেওয়া রয়েছে। এ বিষয়ে অহেতুক বির্তক তৈরি করা হচ্ছে।’’