বিকাশ ভট্টাচার্য। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার পর প্রাথমিক ভাবে বাম আমলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মঙ্গলবার তার পাল্টা জবাব দিলেন সিপিএমের রাজ্যসভা সাংসদ তথা কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ভট্টাচার্য।
তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, বাম আমলেই কলকাতায় বেআইনি নির্মাণের সূচনা হয়। বাম জমানায় কলকাতা পুরসভায় সঠিক ভাবে অডিট হত না বলেও শাসকদলের অভিযোগ তোলে। মঙ্গলবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠকে বিকাশ বলেন, ‘‘তৃণমূলের রাজনৈতিক ডিএনএ-তে দু’টি বিষয় রয়েছে। এক, অসত্য আর দুর্নীতি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পর আমি যখন মেয়র হয়েছিলাম, সেই সময়ে বকেয়া অডিট আমরাই করিয়েছিলাম।’’
ফিরহাদের কথা উদ্ধৃত করে বিকাশ বলেন, ‘‘হাকিম সাহেবই তো বলেছেন, বাম আমলে অনুমতি পেতে গিয়ে চটির সুকতলা ক্ষয়ে যেত। হ্যাঁ, ঠিকই! আমাদের সময়ে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিইনি। এখন এগুলো হচ্ছে। নিয়মাবলি শিথিল করার নামে আসলে দুর্নীতিকে পুষ্ট করা হয়েছে।’’
রবিবার মধ্যরাতে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভেঙে পড়ে নির্মীয়মাণ একটি বহুতল। জানা যায়, তা বেআইনি ভাবে মাথা তুলেছিল। পুরসভার তরফেও স্বীকার করে নেওয়া হয়, ওই বহুতলটি নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুমতি ছিল না। ওই বহুতলের প্রোমোটারকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোমবার সকালে অকুস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি দেখা করেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখমদের সঙ্গেও। বিকাশ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যে বাড়িটি ভেঙে পড়েছে তা তো গত দু’বছর ধরে হচ্ছিল। তার দায় কার?’’
যদিও সোমবার কিছুটা ‘অসহায়তা’র সুরে মেয়র ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। আমি দূর করতে পারছি না।’’ পাশাপাশি অবশ্য তিনি এ-ও জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণ ঠেকানার চেষ্টা তিনি চালিয়ে যাবেন, হাল ছাড়বেন না।