Bijaya Dashami

BIjaya Gathering: সম্প্রীতি সম্মেলনে বেঁধে বেঁধে থাকার ডাক

দেশে, উপমহাদেশে নানা ঘটনায় মাথা চাড়া দিয়েছে বিভেদকামী শক্তি। কিন্তু তা চিড় ধরাতে পারেনি ‘একসঙ্গে বাঁচবই’ ইচ্ছেটুকুতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৩৫
Share:

পাশাপাশি: ‘নো ইয়োর নেবার’ মঞ্চে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

শেষ দেখা হয়েছিল অতিমারি শুরুর আগে। প্রায় দু’বছর বাদে ‘পড়শিকে জানুন’ ডাক দিয়ে ফের মুখোমুখি বসা হল। মালুম হল, পাশাপাশি বেঁধে বেঁধে থাকার সঙ্কল্প একটুও ঢিলে হয়নি।

Advertisement

‘নো ইয়োর নেবার’ বা পড়শিকে জানার এই মঞ্চ রবিবার সন্ধ্যায় ‘সম্প্রীতি সম্মিলনী’র ডাক দিয়েছিল যোধপুর পার্কের একটি কাফেতে। দু’বছরে সংক্রমণের ভয়ের দূরত্ব ছাড়াও মানুষে মানুষে বিভাজনের কম চেষ্টা হয়নি! দেশে, উপমহাদেশে নানা ঘটনায় মাথা চাড়া দিয়েছে বিভেদকামী শক্তি। কিন্তু তা চিড় ধরাতে পারেনি ‘একসঙ্গে বাঁচবই’ ইচ্ছেটুকুতে।

এ শহরের বিভিন্ন পাড়ায় বিচ্ছিন্নতার কোটর ভাঙতে এত দিন এই মঞ্চ কলকাতার মূলস্রোতের কাছে কার্যত ‘বেপাড়া’ মুসলিম বা খ্রিস্টান অধ্যুষিত মহল্লাগুলির রঙিন গল্প মেলে ধরত। এ দিন এখানেই উঠে এল, সমাজমাধ্যমের প্রচারে খানিক ব্রাত্য এক অন্য বাংলাদেশের গল্প। বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা থেকে পাঁশকুড়া কলেজের অধ্যাপক অভিজিৎ করগুপ্ত শোনাচ্ছিলেন সেই বাংলাদেশের কথা— সংখ্যালঘুর অপমান-হেনস্থায় যেখানে সংখ্যাগুরুর হৃদয় রক্তাক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে ব্রতী সে বাংলা অসাম্প্রদায়িক থাকার যুদ্ধে হাল ছাড়তে নারাজ। সদ্য আফগানিস্তান থেকে ফেরা যুবক আজহারুল হকও শুনিয়েছেন, তালিবান ক্ষমতায় বসলেও হার মানতে না-চাওয়া অন্য আফগানিস্তানের গল্প। “আমি বিশ্বাস করি, আফগানিস্তানের অজস্র ছেলেমেয়ের পড়াশোনা শেখা বা মাথা উঁচু করে বাঁচার ইচ্ছে কিছুতেই হার মানবে না”— বলছিলেন আজহার।

Advertisement

এ শহরের বাসিন্দা আইএএস-কর্তা পি বি সালিমের স্ত্রী তথা সমাজকর্মী, মালয়লমভাষী ফাতিমা সালিম বা স্কুলশিক্ষিকা কন্নড়ভাষী মাধুরী কুট্টিরা বলছিলেন, অসহিষ্ণুতার আঁচেও বাংলার বহুত্বের আদর্শের দিকে এখনও তাকিয়ে অনেকে। সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় বললেন, যুগের হাওয়ায় আমাদের মনের মধ্যে বসত করা নানা ভুল ধারণা নিয়ে। তাঁর কথায়, “মানসিক রোগীদের নিয়ে শিক্ষিত মহলেও ছুতমার্গ। কিন্তু কিছু গরিব মুসলিম ঘরে নানা অনটনেও মানসিক সমস্যায় ভোগা প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে থাকার চেষ্টা দেখি।” আবার এই শহরেই বিভাজনের গণ্ডি-কাটা বিভিন্ন ঘেরাটোপের গল্পও উঠে এসেছে কারও কথায়। সমাজকর্মী অনুরাধা কপূর হাসছিলেন, ‘‘বিভাজন মনস্কতারও নানা ধাঁচ এখানে! যেমন অবাংলাভাষীরা সবাই অবাঙালি তকমা পেয়ে যায়!’’ এ শহর বা সর্বত্র হিন্দু, মুসলিম সমাজের দৈন্যের কথাও উঠে এসেছে। যেমন, সব সম্প্রদায়ের মধ্যেই গৃহহিংসা বা বউ পেটানোর প্রবণতা কিন্তু দেখা যায়। মুসলিম সমাজের মেয়েদের স্বাধীনতা নিয়ে নানা বিরূপ ধারণা রয়েছে। সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায় মনে করিয়েছেন, ‘‘নাগরিকত্ব আইন বিরোধী লড়াইয়ে মুসলিম মেয়েদের নেতৃত্ব কত ভুল ধারণাকে খানখান করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement