শুধু ঝড়বৃষ্টিই নয়, কখনও কখনও জোরে হাওয়া দিলেও গাছ পড়ে যাচ্ছে সল্টলেকে। কখনও তা গিয়ে পড়ছে চলন্ত গাড়ির উপরে, কখনও আবার গাছ পড়ে আহত হচ্ছেন পথচলতি মানুষ। এমন ঘটনা আটকাতে তাই এ বার হেলে যাওয়া, বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা বা যে কোনও সময়ে পড়ে যেতে পারে এমন গাছগুলি চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধাননগর পুরসভা।
বর্ষা আসার আগেই ওই গাছগুলিকে চিহ্নিত করে তার একটি তালিকা বিধাননগর পুর প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়ার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমবেশি ১৫ দিনের মধ্যে ওয়ার্ডপিছু ওই তালিকা পুর প্রশাসনের কাছে জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা। তবে তালিকা তৈরির পরে চিহ্নিত করা ওই গাছগুলি নিয়ে কী করবে পুরসভা, তা নিয়ে অবশ্য এখনই কিছু জানাতে চাইছে না পুর প্রশাসন। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি (মণ্ডল) বলেন, ‘‘বর্ষার আগেই যে সব গাছ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, তার তালিকা প্রস্তুত করার চেষ্টা চলছে। এর পরে বন দফতর এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কী ধরনের পদক্ষেপ করা সম্ভব, তা স্থির করা হবে।’’
গত মে মাসে সে ভাবে ঝড় না হলেও গাছ পড়ে যাওয়ার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে সল্টলেকে। গত কয়েক বছরে বিধাননগর পুর এলাকার অনেক জায়গাতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এমনকি, গাছ পড়ে আহতও হয়েছেন পথচলতি মানুষ। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন এ বিষয়ে পর্যালোচনা করে কোনও পদক্ষেপ করছে না পুরসভা। কর্মসূত্রে সল্টলেকে নিয়মিত যাতায়াত করা, মধ্য কলকাতার বাসিন্দা আশিস চট্টোপাধ্যায়ও বলছেন, ‘‘ঝড়বৃষ্টির মধ্যে সল্টলেকে যাতায়াত করার সময়ে সতর্ক থাকতে হয়। গাছ বাঁচাতে তাই স্থায়ী পদক্ষেপ করার প্রয়োজন।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের কারও কারও আবার যুক্তি, গাছ সল্টলেকের মূল সৌন্দর্য। তবু নগরোন্নয়নের প্রয়োজনে বহু গাছ কাটা হয়েছে। এ ছাড়াও নানা কারণে ভূপতিত হয়েছে এলাকার বহু গাছ। তাই সেই সব কারণ অনুসন্ধান করে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করার দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বিপজ্জনক ভাবে থাকা গাছ কেটে ফেলাই এই সমস্যার সমাধান নয়। তাই গাছ কাটা ছাড়া অন্য উপায় না থাকলে তার বদলে চারা রোপণের পক্ষে সওয়াল করছেন তাঁরা।
পুরসভা সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে যে, প্রাথমিক ভাবে তালিকা তৈরি করে বিপজ্জনক ভাবে থাকা গাছগুলি বাঁচানোর চেষ্টা করা হবে। তবে একান্ত উপায় না থাকলে তবেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।