বাজেট পেশ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার, বিধানসভায়। —নিজস্ব চিত্র
রাজ্য বাজেটে পরিকাঠামো খাতে বিপুল বরাদ্দের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহর কলকাতা থেকে গ্রামীণ এলাকা— সর্বত্র রাস্তা ও উড়ালপুল নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ভোট অন অ্যাকাউন্টে। এ ছাড়া তফসিলি জাতি-উপজাতিদের জন্য বাড়ি নির্মাণ, কৃষকদের আর্থিক সাহায্য বাড়ানো, তাজপুরে সমুদ্র বন্দরের মতো একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যে সাড়ে ছ’হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। রাজ্য বাজেটেও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেল রাস্তা ও উড়ালপুল। শহর কলকাতায় যেমন প্রচুর উড়ালপুল নির্মাণের প্রস্তাব রয়েছে, গ্রামাঞ্চলে তেমন প্রচুর নদী-নালার উপর ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব পেশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ৫ বছরে ৪৬ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, আগের অর্থবর্ষে মোট ২০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে বাংলা।
তফসিলি জাতি, উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যও কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী। বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন, আগামী ৫ বছরে মোট ২০ লক্ষ পাকা বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্য নিয়েছে রাজ্য সরকার। বাজেটে প্রস্তাব দিয়েছেন, সমস্ত মাটির বাড়িগুলি পাকা করা হবে। তার জন্য মোট ১৫০০ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব দিয়েছেন মমতা।
কেন্দ্রের ‘পিএম কিসান সম্মান নিধি’ প্রকল্প চালু না করা নিয়ে ক্রমাগত আক্রমণ করছে বিজেপি। রাজ্যের শাসক দলেরও পাল্টা জবাব, তাঁদের ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্প রয়েছে। এই প্রকল্পে বছরে দু’বার একর পিছু ৫০০০ টাকা করে পেতেন চাষিরা। এ বার বাজেটে আগামী মরসুমের জন্য সেই অনুদান প্রতি একরে আরও ১ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। নথিভুক্ত ভাগচাষিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই প্রকল্পে।
ভোটের আগে ‘দুয়ারে সরকার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের পরে আর এই সব কিছুর কোনও হদিশ থাকবে না। কিন্তু বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, বছরে দু’বার এই ক্যাম্প চলবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড ভবিষ্যতেও চলবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৩ বছর অন্তর রিনিউ করা যাবে কার্ড। চালু থাকবে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার প্রক্রিয়াও। নেতাজিকে সম্মান জানাতে এ বার কলকাতা পুলিশে গঠন করা হবে ‘নেতাজি ব্যাটালিয়ন’। তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা। এ ছাড়া নিউটাউনে আজাদ হিন্দ স্মারক নির্মাণের প্রস্তাবও রয়েছে বাজেটে।
ধাপে ধাপে দেড় লক্ষ উদ্বাস্তুকে জমির দলিল দেওয়ার ঘোষণাও করা হয়েছে বাজেটে। অন্ডাল বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের গড়ে তুলতে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। অর্থবরাদ্দ হয়েছে তাজপুরে গভীর সমুদ্রবন্দরের জন্যও।