প্রতীকী ছবি।
হাওড়ার জয়পুরে এক ‘পরিচিতের’ বাগানবাড়িতে রাত কাটিয়ে পরদিনই আস্তানা বদলের পরিকল্পনা ছিল বেহালার চড়কতলা-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বাপানের। পরিচিত ওই ব্যক্তিকেও সে কথা তাঁরা জানিয়েছিলেন। পুলিশের নজর এড়াতে জয়পুরের আস্তানা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মোবাইলও রেখে এসেছিলেন বাপান। কিন্তু দিঘা থেকে হাওড়ায় তাঁদের নিয়ে আসা ভাড়া গাড়ির চালক পুলিশের হাতে ধরা পড়তেই ভেস্তে যায় গোটা পরিকল্পনা। ভোরেই জয়পুরের ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় বাপান-সহ সাত জনকে।
সূত্রের খবর, বালেশ্বর থেকে দিঘা হয়ে শনিবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ একটি গাড়ি ভাড়া করে হাওড়ার কাটারিয়ায় পৌঁছন বাপানরা সাত জন। বাপানের সঙ্গী রানা ও তানার এক পরিচিতের বাড়িতে রাত কাটানোর পরিকল্পনা করেন অভিযুক্তেরা। সেই মতো প্রথমে ওই ব্যক্তির কাটারিয়ার অফিসে যান রানা ও তানা। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে বাপন দেখা করেননি বলেই খবর। নীচে গাড়িতে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, পরিচিত ওই ব্যবসায়ীকে রানা এবং তানা জানান, তাঁর জয়পুরের বাগানবাড়িতে রাতটুকু কাটাতে চান তাঁরা। দু’জনে পূর্ব পরিচিত হওয়ায় রাজি হয়ে যান ব্যবসায়ী।
এর পরেই বাড়ির চাবি নিয়ে জয়পুরের উদ্দেশে রওনা দেন সাত জন। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের মোবাইল কাটারিয়াতেই রেখে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা। পরিচিত ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কী করে বুঝব ওরা এ সব করে এসেছে? তখন তো বাপানকে দেখিইনি। মোবাইল রেখে যাচ্ছে দেখে এক বার সন্দেহ হয়েছিল। জিজ্ঞেস করায় জানিয়েছিল, পরে সব বলবে। পরিচিত হওয়ায় তখন আর কিছু বলিনি।’’
কাটারিয়া থেকে অন্য একটি গাড়ি ভাড়া করে শনিবার সন্ধ্যায় জয়পুরের বাগানবাড়িতে সাত জন পৌঁছন। এ দিকে, দিঘা থেকে বাপানদের নিয়ে আসা গাড়ির চালক পুলিশের হাতে ধরা
পড়তেই ভেস্তে যায় সব। পুলিশ জানিয়েছে, চালক আটক হতেই গোটা বিষয়টি জানতে পারেন লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখার আধিকারিকেরা। সেই মতো শনিবার রাতেই প্রথমে কাটারিয়া ও পরে জয়পুরের বাগানবাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ। রবিবার ভোর চারটে নাগাদ বাগানবাড়িতে পৌঁছেও পুলিশ কিছু সময় অপেক্ষা করেছিল বলে খবর। শেষে পুরো বাড়ি ঘিরে ফেলে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ গেটের তালা ভেঙে ঢুকে বাপান-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। জানা গিয়েছে, মোবাইলের অবস্থান দেখে পুলিশ যাতে তাঁদের কাছে পৌঁছতে না পারে, সে জন্যই ৪৫ কিলোমিটার দূরে মোবাইল রেখে এসেছিলেন বাপানরা। যদিও শেষরক্ষা হয়নি।
ইতিমধ্যেই ধৃতদের জেরা করে আরও কয়েক জনের নাম উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আরও নাম সামনে আসছে। ওই ঘটনায় তাঁদের কী ভূমিকা ছিল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ এই ঘটনায় প্রথমে গ্রেফতার হওয়া ১৬ জনকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ২ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।