এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক।— ফাইল চিত্র।
এত দিন শহরের নিকাশি ও পানীয় জল সরবরাহের উন্নয়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের (এডিবি) ঋণ পেত পুর প্রশাসন। কিন্তু কঠিন বর্জ্য অপসারণের প্রকল্পে তা মিলত না। এ বার সেই বাধা কাটতে চলেছে। কলকাতা শহরের জঞ্জাল অপসারণের স্থায়ী পরিকাঠামো গড়ার কাজেও এডিবি-র আর্থিক ঋণ মিলবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের জঞ্জাল অপসারণের পরিকাঠামো গড়তে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ চেয়ে প্রস্তাব পাঠাবে পুরসভা। এ জন্য বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিয়ে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করা হবে।
পানীয় জল এবং নিকাশির পরিকাঠামো গড়তেই এত দিন এডিবি ওই ঋণ দিত। নিয়ম অনুযায়ী কেইআইআইপি কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন পাঠায়। পাঠাতে হয় প্রকল্প রিপোর্টও। এডিবি-র কর্তারা সে সব যাচাই করে তবে তা অনুমোদন করেন। কেইআইআইপি-র মাধ্যমে সেই টাকায় কাজ করে পুরসভা।
জঞ্জাল অপসারণের কাজে এত দিন কেন এই ঋণ মিলত না? মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দেবব্রত মজুমদার জানান, শহরের জঞ্জাল অপসারণের কোনও মাস্টার প্ল্যান এত কাল হয়নি। আর তা না থাকলে এডিবি-র ঋণ মেলে না। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বাধীন পুরবোর্ড জঞ্জাল অপসারণের কাজে এডিবি-র আর্থিক সহায়তার উপর জোর দেয়। বুধবার পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে মাস্টার প্ল্যান অনুমোদিত হয়।
মাস্টার প্ল্যানে কী বলা হয়েছে? জঞ্জাল অপসারণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, দৈনিক সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন জঞ্জাল জমে শহরে। এর মধ্যে পচনশীল দ্রব্য, প্লাস্টিকের জিনিস, মেডিক্যাল, বৈদ্যুতিন, ইট-পাথর জাতীয় বর্জ্যও রয়েছে। আলাদা ভাবে প্রতিটি পদার্থ কত পরিমাণ জমে, পৃথকীকরণের কী পদ্ধতি রয়েছে— এ সবই রয়েছে মাস্টার প্ল্যানে। জঞ্জাল কুড়ানিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা কী ভাবে হবে, বর্তমানে ধাপার জমির পরিবর্তে নতুন জমির খোঁজ, সেখানে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার প্রকল্প তৈরি করার বিষয় প্রভৃতিও রয়েছে ওই মাস্টার প্ল্যানে। সেখানে জানানো হয়েছে, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ করা হবে। রাজ্য সরকারের মাধ্যমে তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রকে পাঠিয়েছে।
নতুন এই মাস্টার প্ল্যান প্রাথমিক ভাবে এডিবি-রও পছন্দ হয়েছে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর। জঞ্জাল অপসারণের কাজে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে বর্তমানে এডিবি তা যাচাই করার দায়িত্ব দিয়েছে।