নিজাম প্যালেস থেকে বার করে আশিস পাণ্ডেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের টিএমসিপি নেতা আশিস পাণ্ডেকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। শুক্রবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। আশিসকে তিন দিনের সিবিআই হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
আশিস আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত। অভিযোগ, হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতিকাণ্ডে সন্দীপের সঙ্গে তাঁরও যোগ ছিল। এর আগে এক দিন সিবিআইয়ের দফতরে তিনি হাজিরাও দিয়েছিলেন। আশিসের বিরুদ্ধে সরকারি হাসপাতালে ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে অভিযুক্তদের আরজি কর হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের মধ্যেও ছিলেন আশিস। তবে তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে আর্থিক দুর্নীতি মামলাতেই।
আদালতে সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়, আর্থিক দুর্নীতি মামলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত আশিস। তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি, ডাক্তারদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, আশিস জুনিয়র চিকিৎসকদের হুমকি দিতেন। এমনকি, সিনিয়র চিকিৎসকদেরও প্রত্যন্ত এলাকায় বদলি করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। মোটা টাকা নিয়ে হাউস স্টাফ নিয়োগ করতেন এই আশিস। এই সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন, জানায় সিবিআই। তাঁকে সোমবার পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁর মোবাইল-সহ সাতটি জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরজি করে আর্থির দুর্নীতি মামলায় এর আগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সন্দীপকেও প্রথমে এই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়। পরে আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের মামলাতেও সন্দীপকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, আরজি করে যে দিন তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সে দিন, অর্থাৎ ৯ অগস্ট সল্টলেকের একটি গেস্ট হাউসে উঠেছিলেন আশিস। তদন্তকারীদের একটা অংশ মনে করেন, ওই ঘটনার সঙ্গেও জড়িত থাকতে পারেন আশিস। সেই কারণে তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সল্টলেকের ওই গেস্ট হাউসের কর্মীকেও নথি-সহ ডেকে পাঠানো হয়েছিল সিবিআই দফতরে। ফলে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেও আশিসের জড়িত থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য পুলিশ সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করেছিল। কিন্তু পরে এই তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই তদন্তের সূত্রেই আশিসকে গ্রেফতার করা হয়েছে।