ফাইল চিত্র।
ট্রেন থেকে মাথা বার করে ছবি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়লেন বাগুইআটির বাসিন্দা এক পর্যটক। তাঁর নাম শোভন বিশ্বাস (২৭)। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সেবক ও গুলমা স্টেশনের মাঝে। কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস এ দিন যখন সেবক ছেড়ে গুলমার দিকে যাচ্ছিল, সেই সময়ে শোভন তাঁর শরীরের কিছুটা অংশ বার করে ছবি তুলতে যান বলে দাবি তাঁর সঙ্গীদের। তখনই বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা খেয়ে ট্রেন থেকে পড়ে যান তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়েছে। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভনের শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক।
জানা গিয়েছে, কলকাতার বাগুইআটি এবং কেষ্টপুর এলাকা থেকে ২৫ জন যুবকের একটি দল ডুয়ার্সে বেড়াতে যাচ্ছিল। শোভন সেই দলেই ছিলেন। তাঁর বন্ধু বাবলু লায়েক এখন নার্সিংহোমে শোভনের সঙ্গে রয়েছেন। তিনি জানান, সেবক স্টেশন ছেড়ে ট্রেনটি যখন গুলমার দিকে রওনা দেয়, শোভন আর এক বন্ধুকে ডেকে নিয়ে দরজার কাছে যান। দরজার হাতল ধরে সামনের দিকে ঝুঁকে পাশের জঙ্গল সমেত তাঁর ছবি জানলা থেকে ওই বন্ধুকে তুলে দিতে বলেন তিনি। বাবলু বলেন, ‘‘এই করতে গিয়েই রেললাইনের ধারে থাকা বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে শোভনের ধাক্কা লাগে। ও ট্রেন থেকে পড়ে যায়।’’
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র রেল পুলিশের তরফে সেবক-রংপো প্রকল্পের আধিকারিকদের ফোন করা হয়। ওই ঠিকাদার সংস্থার একটি অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে শোভনকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ির
একটি নার্সিংহোমে। ওই নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, মাথায় ছাড়াও ওই যুবকের শরীরের অন্যান্য জায়গায় অল্পবিস্তর চোট রয়েছে। তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। শোভনের বন্ধুরা জানিয়েছেন, ট্রেনের গতি বেশি থাকলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
এর আগে ২০১৯ সালে টয় ট্রেন থেকে শরীর বার করে ছবি তুলতে গিয়ে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল হুগলির ব্যবসায়ী প্রদীপ সাক্সেনার। কিছু দিন আগেও আমবাড়ি-ফালাকাটা স্টেশনের কাছে পদাতিক এক্সপ্রেসের দরজা থেকে পড়ে গিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রেলের একটি সূত্রের বক্তব্য, এই ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা আটকাতে বার বার যাত্রীদের সচেতন করা হয়। কিন্তু তার পরেও অনেকে ঝুঁকি নেন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘‘চলন্ত ট্রেন থেকে কেউ যাতে মাথা বার না করেন, সেই ব্যাপারে নিয়মিত প্রচার করা হয়।’’ এ দিন শোভনের দুর্ঘটনা সেই প্রসঙ্গটিই নতুন করে সামনে নিয়ে এল।