Junior Doctor’s Protest on RG Kar Issue

আন্দোলনে রাজনীতি নেই, আলোচনায় আপত্তি নেই, তবে শর্ত মানতে হবে, বলে দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা

নবান্নে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের সাংবাদিক বৈঠকের পরেই জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে কিঞ্জল নন্দ প্রতিক্রিয়া জানান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৪
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে কিঞ্জল নন্দ। ছবি: সুদীপ্তা চৌধুরী সরকার।

নবান্নে মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকের পরেই জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে কিঞ্জল নন্দ প্রতিক্রিয়া জানালেন তাঁদের সল্টলেকের ধর্নাস্থল থেকে। তিনি বললেন, ‘‘এই আন্দোলনে কোনও রাজনীতির রঙ নেই।’’ তাঁদের চার দফা শর্ত মানলে আলোচনায় যোগ দিতে কোনও আপত্তি নেই বলেও জানান কিঞ্জল।আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের আর এক নেতা অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘যে মুহূর্তে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে, সেই মুহূর্তে আমরা আলোচনায় যোগ দেব।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ ভাবে অরাজনৈতিক। প্রসঙ্গত, জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে কিঞ্জল বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন, নবান্নের বৈঠকে গেলেও ডাক্তারদের প্রতিনিধিদল সেখানে কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হবে না। তাঁরা বৈঠক গেলে, সেখান থেকে আবার অবস্থান বিক্ষোভ মঞ্চে ফিরে আসবেন। সকলের সঙ্গে আলোচনার পরই কর্মবিরতি এবং অবস্থান-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

এর পর চার দফা শর্ত দিয়েছিলেন তাঁরা— প্রথমত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বৈঠকে থাকতে হবে, দ্বিতীয়ত, ৩০ জনের প্রতিনিধি দলকে নবান্নে যেতে দিতে হবে, বৈঠকের লাইভ টেলিকাস্ট করতে হবে এবং কর্মবিরতি প্রত্যাহার নয়, আলোচনা হবে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তাঁরা বৈঠকে যাননি। অনিকেত এ প্রসঙ্গে জানান, রাজ্য সরকার তাঁদের চার দফা দাবি সংক্রান্ত মেলের কোনও জবাব দেয়নি বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। এর পরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।

মুখ্যসচিব মনোজ বললেন, “দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ওঁরা এখনও আসেনি। আলোচনার জন্য ওঁদের আসা উচিত ছিল।” তিনি আরও বলেন, “আমরা জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধ করেছিলাম, কাজে ফিরতে। মানুষকে পরিষেবা দেওয়া তাঁদের দায়িত্ব। আমি বলেছিলাম, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানার জন্য।” সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গঠনমূলক আলোচনার জন্য আজ সন্ধ্যা ৬টার সময় ডেকেছিলাম। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় যেখানে যেখানে আরও উন্নতির প্রয়োজন, সেটি নিয়ে আলোচনা করতাম আমরা। নিরাপত্তা নিয়ে আমরা কী কী কাজ করছি, সেটিও ওঁদের বলার ছিল। আমরা চেয়েছিলাম ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু ওঁরা এখনও আসেননি। আমরা এতক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম।”

Advertisement

অন্য দিকে, রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, এমন আন্দোলনের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। তিনি বলেন, “অপরাধীদের শাস্তির জন্য শুধু মুখে বলা নয়, রাজ্য বিধানসভায় বিলও পাশ হয়ে গিয়েছে। আজ একটি খোলা মনে আলোচনা চেয়েছিলাম। গতকাল থেকে এই নিয়ে টানাটানি হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তা দেখেছেন। এটি অন্য কোনও ক্ষেত্র নয়, রোগী পরি‌ষেবা দেওয়ার ক্ষেত্র। সাধারণ মানুষ যাতে বঞ্চিত না হন, সে জন্যই অনুরোধ করা হচ্ছে বার বার। সুপ্রিম কোর্ট ৯ সেপ্টেম্বর নির্দেশ দিয়েছিল, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে তাঁদের কর্মবিরতি তুলে নিতে। আমরা অপেক্ষা করছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে মান্যতা দেবেন।”

রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব বলেন, “আমরা ওঁদের নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। অন্যান্য কর্মস্থলগুলিতেও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করব আমরা। আমরা হাসপাতাল ও অন্য কর্মস্থলগুলির নিরাপত্তা আরও বর্ধিত করছি। আমি চাই, ওঁরা তাড়াতাড়ি কাজে ফিরে আসুক। কাজে ফিরে এলে ওঁরা নিশ্চিত ভাবে একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন।’’ কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিতে যে তাঁরা ভরসা রাখছেন না, কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা বুঝিয়ে দিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement