প্রতীকী চিত্র
বিল না মেটানোয় এক রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল নাগেরবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সামনে মুচলেকা দিয়ে রোগিণীকে তাঁর ছেলে অন্য হাসপাতালে নিয়ে যান বলে দাবি পরিবারের। সোমবার রাতে অবশ্য দ্বিতীয় হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধা করবী কারকের।
গত ১০ ডিসেম্বর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় দমদমের মল রোডের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধার। তাঁকে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান ছেলে ইন্দ্রনাথ কারক এবং মেয়ে রিয়া কারক। বিল না মেটানোর কারণ হিসেবে ইন্দ্রনাথের দাবি, ‘‘মায়ের স্বাস্থ্যবিমার উপরে ভরসা করেছিলাম। কিন্তু প্রিমিয়াম নির্দিষ্ট সময়ের পরে দেওয়ায় স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা মেলেনি।’’ বিমার টাকা পাবেন না জেনে গত সোমবার মাকে ছাড়িয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেন ইন্দ্রনাথ। এ জন্য ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বিল দিতে হত। ইন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘ওই টাকা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। কর্তৃপক্ষকে বলি, পরে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের সব শর্তে রাজি আছি।’’
ছেলের অভিযোগ, প্রস্তাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। বরং শনিবার হাসপাতালের দুই প্রতিনিধি ইন্দ্রনাথকে জোর করে হাসপাতালে তুলে আনেন বলে অভিযোগ। ইন্দ্রনাথের দাবি, তাঁকে কয়েক ঘণ্টা আটকে মুচলেকা লিখিয়ে ছাড়া হয়। শেষ পর্যন্ত দমদম থানার হস্তক্ষেপে রবিবার দমদম পুরসভার হাসপাতালে করবীদেবীকে স্থানান্তর করানো হয়। ইন্দ্রনাথের কথায়, ‘‘মাকে কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রেখেছিল ওই বেসরকারি হাসপাতাল। সে জন্য শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়ে যায়। হাসপাতাল ঠিক মতো চিকিৎসা করলে মাকে হারাতাম না।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আচরণের বিরুদ্ধে দমদম থানায় জেনারেল ডায়েরি করেছেন মৃতার ছেলে।
পুলিশ সূত্রের খবর, পরিবারের বিরুদ্ধে ‘নো পেমেন্ট’-এর অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সিইও নিবেদিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে তুলে আনার অভিযোগ ঠিক নয়। চিকিৎসাও বন্ধ হয়নি। পরিবারটি তিন লক্ষ টাকার বিল না মেটানো সত্ত্বেও রোগীকে ছাড়া হয়েছে।’’ মৃতার পরিবারের অভিযোগের বয়ান তদন্ত সাপেক্ষ বলে জানিয়েছে পুলিশও।