—ফাইল চিত্র
আলিপুর ফৌজদারি আদালতে আইনজীবীদের বিক্ষোভে অচল হয়ে গেল মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসের শুনানি।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার আলিপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে লেক থানা এলাকায় প্রতারণার মামলায় ধৃত এক আসামিকে তোলা হয়। ২০১৬ সালের একটি প্রতারণার মামলায় বিশ্বনাথ মাকাল নামে এক অভিযুক্তকে শনিবার গ্রেফতার করে লেক থানার পুলিশ। ধৃতকে দশ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। এর পরেই বিশ্বনাথের দুই আইনজীবী জামিনের আবেদন
করেন। বিচারক দু’পক্ষের সওয়াল শোনার পরে দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের পুলিশি হেফাজতের বিরোধিতা করে দুই আইনজীবী এজলাসেই বিচারকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। যার জেরে বিচারক ঘণ্টা তিনেক ঠায় বসে থাকেন। অন্য আইনজীবীদেরও কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়। এ
ভাবেই সন্ধ্যা পেরিয়ে যায়। আইনজীবীদের কাজ করতে না দেওয়ায় এর পরে বিভিন্ন মামলার আসামিদের পরিজনেরাই এজলাসে সওয়াল করেন। রাত ন’টার পরে সেই সব মামলার শুনানি শেষ হয়। তবে এই ঘটনা আলিপুর আদালতে নতুন নয়। বছর তিনেক আগে সারদা মামলায় মদন মিত্রের আইনজীবীরাও অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের একটি নির্দেশের বিরুদ্ধে এজলাসেই বিক্ষোভ শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকি, বিচারককে এজলাস থেকে নামতেও বাধা দিয়েছিলেন ওই আইনজীবীরা। রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
ওই দিন এজলাসের কয়েকটি সিলিং ফ্যান ও টিউবলাইটও ভাঙা হয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে ওই বিষয়ে হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করে।
রবিবারের ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য তথা আলিপুর আদালতের আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ঘটনার বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নেব। তবে আদালতের ভিতরে এমন কিছু ঘটা কখনওই কাম্য নয়।’’
এই ঘটনা প্রসঙ্গে আলিপুর আদালতের সরকারি আইনজীবীদের একাংশের বক্তব্য, এজলাসে এমন কিছু ঘটার অর্থ সরাসরি বিচার ব্যবস্থাকেই আক্রমণ করা। ঘটনাটির কথা শুনে আলিপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ্ত ভৌমিক বলেন, ‘‘আমরা ওই দিনের ঘটনাটির কথা শুনেছি। এ বিষয়ে আলোচনা করে সেই মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’