গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ার পর পুর কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ারদের শোকজ় করা হয়েছে। বদলি করা হয়েছে তাঁদের বেশ কয়েক জনকে। এ বার বেআইনি নির্মাণ রুখতে একটি অ্যাপ চালু করার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। যা দেখেশুনে অনেকের মনে হচ্ছে, চোর পালানোর পর বুদ্ধি খুলছে কর্তৃপক্ষের।
বুধবার পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা সূত্রে খবর, ওই বৈঠকেই একটি পূর্ণাঙ্গ অ্যাপ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কলকাতা পুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও ছবি তুলে ওই অ্যাপে আপলোড করা হবে। অ্যাপে যে তথ্য ও ছবি থাকবে তা জোগান দিতে হবে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের। ওই তথ্য খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন পুর কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অফিস শুরুর সময় হাজিরা দিয়েই নিজ নিজ এলাকায় নির্মীয়মাণ বহুতল পরিদর্শনে বেরোবেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। তাঁরা এলাকার প্রতিটি নির্মাণস্থল ঘুরে দেখবেন। যেখানে বেআইনি নির্মাণ নজরে আসবে সেখানেই দ্রুত নোট তৈরি করে, ছবি তুলে গোটা বিষয়টি পাঠাতে হবে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে। তিনি জানাবেন বরো এগ্জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে। পাশাপাশি, ওই বাড়ির মালিককে নোটিস দিয়ে সতর্ক করতে হবে। তাতেও কাজ না হলে ‘স্টপ অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস ধরাতে হবে। গোটা বিষয়টি বরো এগ্জ়িকিউটিভ জানাবেন ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার ও ডিজি (বিল্ডিং)-কে। তাঁরা সেই রিপোর্ট কলকাতা পুরসভার কমিশনারকে পাঠাবেন। কমিশনার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে তা মেয়রকে জানাবেন। তবে মেয়রের কাছে পৌঁছনোর আগেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে যাবতীয় পদক্ষেপ করবেন পুরসভার আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারেরা।
অ্যাপটি তৈরি হয়ে গেলে যাবতীয় কাজ হবে তার মাধ্যমেই। সেখানেই বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত নোট ও সেই সংক্রান্ত ছবি দেওয়া হবে। ইঞ্জিনিয়ারেরা নিজ নিজ এলাকা পরিদর্শন করে সেই তথ্য ও ছবি পোস্ট করবেন ওই অ্যাপে। যত দিন না অ্যাপ তৈরি হচ্ছে, এই কাজ করা হবে বিল্ডিং বিভাগের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে, সেখানে নোটও লিখে দিতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের।
তবে পুর কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি অ্যাপ তৈরির বিষয়ে বছর দেড়েক আগেও আলোচনা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আলোচনার স্তরেই থেকে গিয়েছিল। এ বার গার্ডেনরিচের ঘটনার পর আবারও সেই আলোচনা শুরু হয়েছে পুরসভার শীর্ষ মহলে। শেষমেশ তা আদৌ কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান পুরসভার আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।