প্রতীকী ছবি।
পরপর ক’দিন একের পর এক হাসপাতাল, নার্সিংহোম ঘুরেও কোভিড পরীক্ষা করানো যায়নি এক মহিলার। শেষে পরীক্ষা হলেও রিপোর্ট আসার আগেই মঙ্গলবার মৃত্যু হল তাঁর। মৃতার পরিজনেদের অভিযোগ, কোভিডের উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও এ দিন তিনি মারা যাওয়ার পরে রিপোর্ট না-পেয়েই দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল নার্সিংহোম। কিন্তু পরিবার রাজি না হওয়ায় দেহটি মর্গে রাখা হয়।
কুঁদঘাটের বাসিন্দা, বছর ৬২-র ওই সরকারি কর্মীর ভাইঝি জানান, তাঁর পিসি গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ হন। জ্বরের সঙ্গে পেটখারাপও ছিল। মহিলা চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অবস্থায় ছিলেন না। পরিজনেরা স্থানীয় চিকিৎসককে উপসর্গের কথা জানান। তিনি ওষুধ দিয়ে কোভিড পরীক্ষার জন্য লিখে দেন। ওই দিন রাতে তাঁর অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁকে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অভিযোগ, সেখানে ডায়রিয়ার ওষুধ দিয়ে তাঁকে এম আর বাঙুরে নিয়ে যেতে বলা হয়।
রাত হয়ে যাওয়ায় রোগীকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন পরিজনেরা। পরের দিন রবীন্দ্র সরোবরের কাছে এক নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কোভিডের পরীক্ষা হয় না বলে অন্যত্র যেতে বলা হয়। সেই মতো বাঘা যতীনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বুকের একটা পরীক্ষা করার পরে জানানো হয়, রোগীকে আইসিইউ-এ রাখতে হবে। কিন্তু শয্যা খালি নেই। এর পরে মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেও শয্যা ছিল না। ওই হাসপাতাল থেকেই জানানো হয়, বাঙুরেও শয্যা খালি নেই। এর পরে রাতে বাইপাসের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইসিইউ-এ ভর্তি করিয়ে জানানো হয়, পরের দিন কোভিড পরীক্ষা হবে। কিন্তু সেই পরীক্ষা হয় সোমবার। রিপোর্ট আসার আগেই মঙ্গলবার সকালে মারা যান ওই মহিলা।
বাঘা যতীন স্টেট জেনারেলে সুপারের দায়িত্বে থাকা শিবু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখানে কোভিড পরীক্ষা হয় না। তাই ওই রোগীকে ভর্তি নেওয়া যায়নি।’’ যে নার্সিংহোমে মহিলা মারা যান, সেখানকার মেডিক্যাল ডিরেক্টর নরেন্দ্রকুমার পোদ্দারের দাবি, ‘‘রিপোর্ট আসার আগে দেহ তুলে দিতে চাইনি। ওঁরা ভুল বুঝেছেন।’’