partha chatterjee

Partha Chatterjee: বিধায়ক পার্থের গ্রেফতারিতে কী হবে সইসাবুদের, চিন্তায় বাসিন্দারা

শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারিতে তাঁর সইসাবুদের কাজগুলির কী হবে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২২ ০৭:১২
Share:

হাসপাতালে ভর্তি থাকা মায়ের জটিল পরীক্ষানিরীক্ষার খরচ মকুবের আর্জি জানাতে প্রয়োজন বিধায়কের সই। কিন্তু দিনদুয়েক ধরে বিধায়কের কার্যালয়ের চক্কর কেটেও তাঁর নাগাল পাননি যুবক। দেখা মেলেনি তাঁর ছায়াসঙ্গীদেরও। কোনও মতে কাউন্সিলরের শংসাপত্র জোগাড় করতে পারলেও বিধায়কের সই ছাড়া আদৌ কাজটা হবে কি না, তা নিশ্চিত নন বীরেন রায় রোডের বাসিন্দা ওই যুবক। স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারিতে তাঁর সইসাবুদের কাজগুলির কী হবে, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরছে বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দাদের অধিকাংশের মনে।

Advertisement

গত শুক্রবার সকালে পার্থের নাকতলার বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) আধিকারিকেরা। দীর্ঘ ১৯ ঘণ্টা জেরার পরে মধ্যরাতে বেহালার পশ্চিমের বিধায়ক পার্থকে গ্রেফতার করে ইডি। ইতিমধ্যেই মন্ত্রী তথা শাসক দলের মহাসচিবকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ইডি। আদৌ কবে তাঁর জামিন মিলবে, সে সম্পর্কে কোনও কথাই নিশ্চিত করে বলতে পারছেন ‘দাদা’র ছোট-বড় ছায়াসঙ্গীরা। ফলেএমতাবস্থায় কারও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বিধায়কের সইয়ের প্রয়োজন হলে সে ক্ষেত্রে কী হবে, সেটাই আপাতত চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বেহালা পশ্চিমের বাসিন্দাদের। শকুন্তলা পার্কের বাসিন্দা চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘‘কার কখন, কোন কাজে এলাকার জনপ্রতিনিধির সই লাগে, তা বলা মুশকিল! হঠাৎ এমন প্রয়োজন হলে কী করব সেটাই ভাবছি। দোষ করবেন উনি, আর তার জন্য ভুগতে হবে আমাদেরও।’’

২০০১ সাল থেকেই বেহালা পশ্চিম বিধানসভা এলাকার বিধায়ক রয়েছেন পার্থ। নাকতলার বাসিন্দা হলেও বেহালা পশ্চিমের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে সেই থেকে বেহালা ট্রামডিপোর কাছে ম্যান্টন রোডে একটি কার্যালয় করেছিলেন বিধায়ক। সপ্তাহে অন্তত দু’-তিন দিন সেই কার্যালয়ে বসতেন পার্থ। সেখান থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজনমতো নানা সইসাবুদের কাজ করতেন। বাসিন্দারাও তাঁদের প্রয়োজনে ওই কার্যালয়েই গিয়ে দেখা করতে পারতেন বিধায়কের সঙ্গে। কিন্তু স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, গত দু’দিন ধরে সেই কার্যালয় বন্ধ। এমনকি কার্যালয়ের দেখভাল করা কর্মীদেরও সে ভাবে দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ। কার্যালয়ের পাশের এক দোকানদার বলেন, ‘‘আগে প্রচুর ভিড় থাকত। সকাল থেকেই লোকজন ভর্তি থাকত। দিন দুই হল সব ফাঁকা হয়ে গিয়েছে।’’

Advertisement

তবে পার্থের হেফাজতের মেয়াদ দীর্ঘ হলে তো বিধানসভা এলাকার উন্নয়নের কাজেও সমস্যা হতে পারে? এই প্রশ্নে অবশ্য এখনই মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয়েরা। আপাতত আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সইসাবুদ পাওয়ার সমস্যাটাকেই তাঁরা বড় করে দেখছেন। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আজকাল কোনও কাজ চিঠি ছাড়া হয় নাকি! সোজা পথে গেলেও কেউ কাউন্সিলরের চিঠি চায়। অনেক জায়গায় আবার সুবিধা নিতে বিধায়কের চিঠির প্রয়োজন হয়। তাই কোনও বিপদআপদ হলে এখন উপরওয়ালাই ভরসা।’’

বিধায়কের গ্রেফতারি যে স্থানীয় বাসিন্দাদের বড় সমস্যার মুখে দাঁড় করিয়েছে, সে কথা মানছেন ওই এলাকার কাউন্সিলরদের একাংশ। এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘বিধায়কের না-থাকা অবশ্যই অসুবিধার। তবে সাধারণ মানুষের বেশির ভাগ সইসাবুদের কাজ কাউন্সিলরকে দিয়েই সাধারণত হয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো ব্যতিক্রম আছে। কেউ আবার বিধায়কের কাছেই কাজ নিয়ে যেতে চান। সে ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement