প্রতীকী ছবি।
দিনভর অস্বস্তিকর গরমের পরে এক পশলা বৃষ্টি। তাতেও অবশ্য স্বস্তির কথা শোনাচ্ছেন না চিকিৎসকেরা। বরং, প্যাচপেচে গরম থেকে পরিত্রাণ পেতে দিনের মধ্যভাগে কয়েক ঘণ্টা এড়িয়ে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের আরও পরামর্শ, করোনাভাইরাস তো বটেই, ধূলিকণা থেকে বাঁচতেও মাস্ক পরাই একমাত্র পথ।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস ছিলই। সেই মতো রবিবার সন্ধ্যায় কিছুটা বৃষ্টি হয় শহর জুড়ে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। তাতে সাময়িক স্বস্তি হলেও আজ, সোমবার থেকে ফের গরমের চোখরাঙানি ফিরবে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকায় বাড়বে অস্বস্তিও। এই গরমে তাই শিশু ও প্রবীণদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, রবিবার কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রির আশপাশে। সঙ্গে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বাড়ায় অস্বস্তি চরমে ওঠে। দুপুরে ফ্যান-এসি চালিয়েও রেহাই মেলেনি। বিভিন্ন প্রয়োজনে যাঁরা দিনে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, ঘেমেনেয়ে একসা হয়েছেন তাঁরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পথঘাট ফাঁকা হতে শুরু করেছে। এই গরমে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরোনোরই পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক
অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘মোটামুটি ভাবে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত তাপমাত্রা সব চেয়ে বেশি থাকে। ওই সময়ে বাইরে বেরোনো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। তা ছাড়া, এই সময়ে প্রচুর জল খেতে হবে। বাইরে বেরোলে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে ছাতা।’’ পাশাপাশি, ঢিলেঢালা পোশাক পরা এবং রাস্তার কাটা ফল না খাওয়ার কথাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন অরুণাংশুবাবু।
শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষের মত, এই গরমে অকারণে শিশুদের বাড়ির বাইরে বার না করাই ভাল। তিনি বলেন, ‘‘শিশুদের যতটা সম্ভব বাড়িতে রাখতে হবে। পাশাপাশি, তেল জাতীয় কোনও জিনিস তাদের গায়ে না মাখানো ভাল। বদলে শ্যাম্পু দিয়ে শিশুদের স্নান করানো উচিত। এই গরমে বাচ্চাদের সুস্থ রাখতে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে।’’
চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, ‘‘এক দিকে গরম, অন্য দিকে ভাইরাসের উপদ্রব। তাই মনে হয়, এই গরমে খুব দরকারি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরোনোই ভাল। যদি একান্ত বেরোতেই হয়, তা হলে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবশ্যই নেওয়া উচিত।’’ প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া এবং বাইরের তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দিচ্ছেন কুণালবাবু।
চক্ষু চিকিৎসক শৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই তীব্র গরম চোখকে শুষ্ক করে দেয়। ফলে গরমের মধ্যে বাইরে বেরোলে অবশ্যই রোদচশমা, টুপি এবং ছাতা ব্যবহার করা উচিত।’’ পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, রোদ থেকে চোখ বাঁচাতে ফ্রিজের ঠান্ডা জল দু’-এক ফোঁটা চোখে দেওয়া যেতে পারে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘রবিবার বিভিন্ন জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কলকাতাতেও বৃষ্টি হয়েছে সন্ধ্যায়। তবে এর ফলে সাময়িক স্বস্তি দিলেও সোমবার থেকে ফের শহরের তাপমাত্রা বাড়বে। সঙ্গে বাড়বে অস্বস্তিও।’’