কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
ধাপা সংলগ্ন এলাকায় পুরসভার অনেক সম্পত্তি জবরদখল হয়ে রয়েছে। তা নিয়ে একাধিক মামলাও চলছে। সেই সমস্ত মামলার বয়ান যাতে তথ্যভিত্তিক হয়, সে জন্য সব দফতরকে আগেই নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। ফের তার উপরে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জবরদখল হওয়া সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলার ধরন সাধারণ মামলার থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। কারণ, মামলার রায় পুরসভার বিপক্ষে গেলে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘তাই ওই সব মামলার বয়ান যাতে তথ্যভিত্তিক হয়, তথ্যে যাতে অস্বচ্ছতা না থাকে, সেই কারণে পুর আইন দফতরকে বলা হয়েছে মামলার সঙ্গে যুক্ত দফতরের সঙ্গে পরামর্শ করার জন্য।’’
জবরদখল হওয়া পুর সম্পত্তি, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলার পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ আদালতের মামলার উপরেও বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তার একটা কারণ, এই সমস্ত মামলার ক্ষেত্রে আদালতের রায় পুরসভার পক্ষে গেলে সম্পত্তির পুনরুদ্ধার বা বেআইনি নির্মাণ ভাঙার প্রসঙ্গ আসতে পারে। কারণ, জবরদখল হওয়া সম্পত্তির পুনরুদ্ধার এবং বেআইনি নির্মাণ ভাঙার সঙ্গে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে।
এর আগে একাধিক বার এমন হয়েছে যে, আদালতের নির্দেশ মেনে সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করতে গিয়ে বা বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে স্থানীয় প্রতিরোধের কারণে পুরকর্মীদের ফিরে আসতে হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পুরকর্মীদের মারধর করার ঘটনাও ঘটেছে। আবার হটমিক্স প্লান্ট, কঠিন ও তরল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে জলাশয় বোজানো, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি-সহ একাধিক মামলা নিয়ে পরিবেশ আদালতে রীতিমতো ব্যতিব্যস্ত হতে হয়েছে পুরসভাকে। ফলে, এই সমস্ত ‘স্পর্শকাতর’ মামলার বয়ান ভীষণ ভাবেই গুরুত্বপূর্ণ পুরসভার পরিপ্রেক্ষিতে। তাই মামলার চূড়ান্ত বয়ানের ক্ষেত্রে মেয়র ও পুর কমিশনারের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, এর আগে ২০২০-’২১, ২০২১-’২২ সালেও মামলার বয়ান তথ্যভিত্তিক হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরেও দেখা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে নিজেদের বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘অস্বস্তি’তে পড়তে হয়েছে পুরসভাকে। কারণ, পুর আইন দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব মামলার সঙ্গে যুক্ত পুর দফতরের। সেই অভাব দূর করতেই মাস পাঁচেক আগে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারির পরে সম্প্রতি ফের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ।