ভোগান্তি: পুরনো মেসকর্মীদের বদলির জেরে হিন্দু হস্টেলে কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে রান্না। নিজস্ব চিত্র
হিন্দু হস্টেলের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লেন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে। আন্দোলনকারী ছাত্রেরা জানিয়েছেন, জীববিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের নাম ইকবাল হাসান। বৃহস্পতিবার রাতে ইকবাল ও তাঁর সঙ্গীরা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার অফিস ঘরের সামনে ধর্না-অবস্থানে বসেছিলেন। সেই সময়ে ইকবাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ইকবালও হিন্দু হস্টেলের বাসিন্দা। গত ১৭ দিন ধরে হস্টেলের দাবি নিয়ে যে আন্দোলন চলছে, ইকবাল প্রথম থেকেই তার সঙ্গে রয়েছেন। আন্দোলনকারী ছাত্রদের দাবি, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁদের জানিয়েছেন, কম খাওয়ার জন্য দুর্বল হয়েই এই অসুস্থতা। ইকবালকে স্যালাইন দেওয়ার পরে কিছুটা সুস্থ হন।
বিক্ষোভকারীদের মতে, ইকবাল গত তিন দিন ধরে কার্যত না খেয়ে আছেন। আবাসিকেরা জানাচ্ছেন, হস্টেলের পুরনো মেসকর্মীদের বদলি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ওই মেসকর্মীরা হস্টেলে থাকলেও তাঁরা রান্না করছেন না গত কয়েক দিন ধরে। বিক্ষোভকারী এক আবাসিক জানিয়েছেন, এত দিনের পুরনো মেসকর্মীদের কেন বদলি করা হল, তা তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন। ফলে আবাসিকেরা এখন দিনের পর দিন বেশি দাম দিয়ে হোটেলের খাবার খেতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান। উত্তরবঙ্গের এক ছাত্র বলেন, ‘‘বেশি দাম দিয়ে দিনের পর দিন হোটেলে খাওয়ার মতো সামর্থ্য অনেকেরই নেই। ফলে অনেকে মুড়ি খেয়েও দিন কাটাচ্ছেন।’’ তাঁদের আশঙ্কা, এমনটা আরও কয়েক দিন চললে ইকবালের মতো অনেকেই হয়তো ঠিক মতো খাবার না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বেন।
ইকবাল জীববিদ্যার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়ায়। চিকিৎসার পরে খানিকটা সুস্থ হয়ে ফের বিক্ষোভ অবস্থানে যোগ দেন তিনি। ইকবাল জানান, তিনি দুর্বল বোধ করছেন। ভাল করে হাঁটতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘‘হস্টেলে রান্না হচ্ছে না গত কয়েক দিন ধরে। এত টাকা নেই যে দু’বেলা হোটেলে খাব। গত কয়েক দিন ধরে শুধু কেক বিস্কুট খেয়ে কাটিয়েছি। এখন বন্ধুরা সাহায্য করছেন।’’ এ দিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হস্টেলে কে রান্না করবেন কে করবেন না, তা ছাত্ররা ঠিক করতে পারেন না। তাঁদের আন্দোলনের পদ্ধতি ঠিক নয়। প্রয়োজনে তাঁরা এসে আমার সঙ্গে আলোচনায় বসুন।’’