Haridevpur

রবিবার থেকে নিখোঁজ বাসিন্দা, হরিদেবপুরের পুকুরে নামল ডুবুরি

পুলিশ জানিয়েছে, সমস্যার সমাধানে রবিবার সকালে নির্মীয়মাণ আবাসনের ফ্ল্যাটমালিকদের সঙ্গে গৌতমের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠক হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ০৮:৫৪
Share:

—প্রতীকী ছবি

বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রবিবার সকালে। দুপুরেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ফেরেননি। বাড়ির লোকজন মোবাইলে ফোন করলে সেটি বেজে যায়। রবিবার রাতেই হরিদেবপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁরা। নিখোঁজ ব্যক্তির নাম গৌতম ঘোষ (৬২)। তিনি সপরিবার বেহালার মতিলাল গুপ্ত রোডের একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, গৌতমের মোবাইলে মঙ্গলবার পর্যন্ত ফোন করলেও তা বেজে গিয়েছে। সেটির টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে জানা যায়, রবিবার দুপুরে হরিদেবপুর থানা এলাকার কালীপদ মুখার্জি রোডের যে জায়গায় তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছিল, তার ১০০ মিটারের মধ্যে ফোনটি রয়েছে। সেই সূত্র ধরে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা এলাকা জুড়ে তল্লাশি শুরু করেছেন। যদিও মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নিখোঁজ ব্যক্তি বা তাঁর মোবাইলের সন্ধান মেলেনি।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গৌতমেরা দুই ভাই ও দুই বোন। তাঁদের কালীপদ মুখার্জি রোডে প্রায় ১০ কাঠা জমিতে বাড়ি ছিল। প্রোমোটিংয়ের জন্য বছর আটেক আগে জমিটি বিক্রি করেন তাঁরা। বর্তমানে যে বাড়িতে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকেন গৌতম, তার ভাড়া প্রোমোটারের দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, গত ১৮ মাস ধরে প্রোমোটার ভাড়া মেটাচ্ছেন না। গৌতমের পরিবারের লোকেরা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, ওই জমিতে নির্মীয়মাণ আবাসনে যে ফ্ল্যাট, টাকা পাওয়ার কথা, তা-ও পাননি গৌতম।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রোমোটারের প্রতিশ্রুতি মতো ফ্ল্যাট না পাওয়ায় প্রায়ই গৌতম অনুশোচনা করতেন। তার উপরে ভাড়ার টাকা না পাওয়ায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রোমোটারের প্রতিশ্রুতি মতো ফ্ল্যাট, টাকা না পাওয়ায় নির্মীয়মাণ আবাসনের চুক্তিপত্রে সই করেননি গৌতম। তাঁর ভাই সই করে দিলেও গৌতম না করায় কলকাতা পুরসভার কাছে সিসি (কমপ্লিশন সার্টিফিকেট) আটকে রয়েছে। যার জন্য যাঁরা ফ্ল্যাট কিনেছেন, তাঁরা ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারছেন না।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, সমস্যার সমাধানে রবিবার সকালে নির্মীয়মাণ আবাসনের ফ্ল্যাটমালিকদের সঙ্গে গৌতমের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। সেই বৈঠক হয়েছিল। পুলিশ ওই আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানতে পেরেছে, বৈঠক শেষে গৌতম সবার আগে আবাসন থেকে বেরিয়ে যান দুপুর ২টো নাগাদ। তার পর থেকেই তাঁর আর খোঁজ নেই। গৌতমের ছোট মেয়ে গ্রেসি ঘোষ বলেন, ‘‘প্রোমোটারের থেকে ফ্ল্যাট ও টাকা না পাওয়ায় বাবা খুব চিন্তিত ছিলেন। বাবা গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতেন। বাড়িভাড়ার টাকাও বাবাকে মেটাতে হত।’’

লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। পরিবারের সদস্য-সহ প্রোমোটারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার থেকেই কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এলাকায় তল্লাশি করছে। সেখানে পুলিশ কুকুরও নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে খবর। এলাকার একাধিক পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে চলছে তল্লাশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement